শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

বই আসে বই যায়!

 


নেমড্রপিং। কিছু পড়ে দারুণ লাগে, কিছু আবার মাথাতেই ঢোকে না, দু একখান 'পড়নে সে হোগা' নিয়ম মেনে চলে। যত পড়বে, ততো কন্সেপ্ট ক্লিয়ার হবে।


১. নস্টালজিয়া। মির্চা কস্টেরেস্কুর 'সোলেনোয়েড' কিছুটা পড়ে ভালো লেগেছিল। আপাতত 'নস্টালজিয়া' নিয়ে বসে আছি, এরপর ফের 'সোলেনয়েড' পড়ব। আধুনিক রোমানিয়ান সাহিত্যের প্রাণপুরুষ হলেন মির্চা, লেখায় সেই গভীরতা প্রতিফলিতও হয়। কিন্তু খুবই আশ্চর্যের কথা, আমার মতো বোকাসোকা পাঠকও দিব্যি পড়ে যেতে পারেন, মাথা ভোম্বল হয় না, হাইও ওঠে না। মাঝেমধ্যে টুকটাক করে কয়েকটি লাইন আসে, তখন নড়েচড়ে বসতে হয়। নস্টালজিয়া শুরু হয়েছে রাশিয়ান রুলেটের এক জনপ্রিয় খেলোয়াড়কে দিয়ে, যে এই খেলাকে কাজে লাগিয়ে প্রাণপণে মরার চেষ্টা করছে। অবশ্যই রুলেটের মাধ্যমে, রিভলবারের চেম্বারে একটার বদলে দুটো, তিনটে চারটে করে গুলি ভরছে খেলার আগে। কিন্তু, কিছুতেই আর সে মরছে না। প্রায় পাঁচটা অংশে বিভক্ত বই, আর অনুবাদের সাবলীলতার কথা আলাদা করে বলতেই হয়। একটা জায়গা দিলাম...


I have writ­ten a few thou­sand pages of lit­er­a­ture – pow­der and dust. In­trigues mas­ter­fully con­ducted, mar­i­onettes with elec­tri­fy­ing grins, but how to say any­thing, even a lit­tle bit, in this im­mense con­ven­tion of art? You would like to turn the reader’s heart in­side out, but what does he do? At three he’s done with your book, at four he takes up an­other, no mat­ter how great the book you placed in his hands. But these ten, fif­teen pages, they are a dif­fer­ent mat­ter, a dif­fer­ent game. My reader now is no one else but death.


২. পার্গোটরি আর অ্যান্টিপ্যারাডাইজ-- চিলির কবিতা নিয়ে আমার একটা ভালো লাগা আছে। আমি নেরুদা বা নিকোনার পাররার কবিতা দেখলেই পড়ে ফেলি, রাউল জুরিতার কবিতাও আমি কম পড়িনি। এই বইদুটো তাঁর প্রথম কাজ, পিনোচে যুগের অত্যাচারের সময় লেখা, প্রায় লিজেন্ড হয়ে গেছে। কিন্তু বলতে লজ্জা নেই, বেশিরভাগটাই আমার মাথার ওপর দিয়ে গেছে। আমি কবিতা বুঝি না সে কথা আমি নিজেই সবচেয়ে ভালো জানি, কিন্তু তবু চেষ্টা চালাই মাঝেমধ্যে,  সবসময় পুরোপুরি হতাশও হতে হয় না। এখানে বড় মুশকিল হয়েছে, জুরিতা দান্তের লেখার যেই দর্শনকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন সেই সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। লেগে থেকে যদি কিছু বোঝা যায়।


৩. ডিমন কপারহেড-- আমেরিকায় যে কত লেখক আছেন! বার্বারা কিংসলভার বহু বছর ধরে লিখছেন, মূলত সামাজিক অবিচার আর আনপ্রিভিলেজড ক্লাসের গল্প লিখতে ভালোবাসেন, অনেকটা আমাদের পরিচালক কেন লোচের মতো। আমি কেলেকাত্তিক, আরো অনেকের মতো তাঁর লেখাও আমি আগে পড়িনি। এই বইটা পুলিত্জার জয়ী হওয়ার পর লিস্টে এসেছিল। ইয়া মোটা বই। কিন্তু হুড়মুড়িয়ে পড়েছি বলা যায়, প্রায় শেষের দিকে আছি। একজন বাচ্চা ছেলের মুখেই গল্পের শুরু, আর পড়তে শুরু করলে কিছু ভাববার ফুরসত থাকে না। এক্সট্রা নম্বর গোটা বই জুড়ে লোকাল ভাষা আর স্ল্যাংকে সাবলীলভাবে ব্যবহার করার জন্য। আমার ভোঁদাইমার্কা বুদ্ধি নিয়েই ভাবতে বাধ্য হচ্ছি, ঠিক কী কারণে এই বইটাকে বুকারের শর্টলিস্টে নমিনেট করা হল না?


৪. লাভ ইন দ্য নিউ মিলেনিয়াম-- কান জু-এর লেখা পড়ার আগে অনেকেই নাকি ভয় দেখায়। আমাকে ভয় দেখানোর লোক নেই, কিন্তু আমি নিজেই ভয়ে কাঁটা হয়েছিলাম। মাথার ওপর দিয়ে গেলেই হয়েছে! এখনও অব্দি তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। চমৎকার লেখা। আমাদের অর্ণবদার (রায়) এর গল্পের মতোই চরিত্রটা পাল্টে পাল্টে যাচ্ছে, প্লটেরও ঠিকঠিকানা নেই। কিন্তু ইমেজারিগুলো, ভিসুয়্যালগুলো একেবারেই অন্যরকম। স্বতন্ত্র। পড়তে বেশ আরামই হচ্ছে। প্রেমের গল্প বলেই হয়তো। প্রেম প্রেম ভাবটা আমি দিব্যি খুঁজে পাচ্ছি।

আমার কথাটি ফুরোল

আর গাছপালা এমনিতেও মুড়িয়ে যাচ্ছে বাইরে...

(কুছ ভি🤟)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন