বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৪

একাকিত্বের ফেয়ারওয়েল

Lost in translation

একলা পথ, বিকেল শেষ

জনস্রোত, পরিবেশ

উদাস দৃষ্টিশুন্য লক্ষ্য

শ্রান্ত হৃদয়, উপত্যকা

হঠাৎ...

কোথায় পথ, নিরুদ্দেশ

সম্মুখে বন

জলপ্রপাত...

জলের ফোঁটা, বৃষ্টিরেখা

সিক্ত শরীর, আপনজন

আলতো সুরে, ঝুপ্পুস জল

চোখ বুজেছি, শান্ত মন

চোখ খুলেছি

যানবাহন

ব্যস্ত শহর, কোলাহল...

ভিড়ের মাথা, বাসের সিড়ি

হাতল ধরে, আসনপিঁড়ি

ঝাঁকুনিখেলা, হেলাফেলা

তারই মাঝে, তন্দ্রামতন

তন্দ্রা ভাঙ্গে, কোথায় কি যে

মেঘ্শহরে, ভিজেভিজে

পাহারচূড়া, ভুলবোনা

কুয়াশাটুপি, উলবোনা

সবুজ পথে, পরম সুখ

যাক হারিয়ে,

আগন্তুক

টুপ টাপ টুপ,জলকণা

স্বপ্নজগতফিরব না

হঠাৎ কাঁপে,ধরণী পায়ে

নিরুপায়..

ফোন এসেছে, এয়ারটেল

এখনো বাসের স্টপ আসেনি

একাকিত্বের ফেয়ারওয়েল!

 



মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০১৪

আমি এসে দেখা করে গেছে আজ
অন্তঃপুরের ধ্বংসস্তুপে ,
অবশেষে
বিদীর্ণ জোছনায়,অনুশোচনায় দগ্ধ
আমার অংশীদার তো আমি,
পাপ
অবিরাম ককিয়ে ওঠা ,নীরব শব্দ
মনস্তাপ ....
উদ্দেশ্যহীন অহমিকা
নীতিবোধের নির্দেশিকা
অকারণ
মূল্যবোধের আড়ম্বর
ভুলদিক,চৌরাস্তা
পরাজিত বিবেক
আমি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে  গেছে
ব্যর্থ জীবন ...
আমি অপেক্ষারত আমার জন্যে

শুধু অহেতুক কিছু পদক্ষেপ......

সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০১৪

এক  লহমায়  ছেড়ে   চলে  যেতে  পারি
ভুলতে  পারি  মায়া
সামলে নিতে  পারি  নিজের  সঙ্গে  বোঝাপড়া
অধরা  জীবন ,টানাপোরণ,সম্পর্ক  আবছায়া
নিরবধি  পথ  চলা
তুমি  অনতিদুরে দাঁড়িয়ে
চিরবিচ্ছিন্ন  নিজের  সঙ্গে,হেঁটে  যাই  পাশ কাটিয়ে
ফিরতে  পারি  না.....
অভিমান  করে  হারিয়ে  যেতে  পারি
অনেক  ঋণ  জমেছে  নিজের  কাছে 
পর্ণমোচী  জীবন
ব্যবধানের  আলিঙ্গন,আমার  প্রাপ্য
ঋণশোধ ক্ষতিপূরণ ?
তোমার  অপেক্ষা
উপেক্ষা করিনি ,কিন্তু বিশ্বাস  কর
বলতে  পারি  না....
হটা  করে  ফুরিয়ে  যেতে  পারি
লহরিমালায়  আত্মসমর্পণ
হরকরাতে  দিয়েছে  তোমার  চিঠি
উদাসীনতা আয়ত্ত করিনি
কিন্তু  একটাও পড়তে পারিনি  খুলে,
অবুঝ  স্বভাব, বিমর্ষ  বিবরণ
তোমাকে  ছাড়া  থাকতে  পারিনা
শুধু  তোমার কথা ,কিন্তু  কথা
বলতে  পারি না 
খুব ভালো লাগে তোমাকে,কিন্তু তোমায়
ভালবাসতে  পারি না ....
.....তুমি হেসে উত্তর দিয়েছ...
ভালবাসা  কি   বাধ্যতামূলক?...... 




---এক
কিছু   ঋণ  রেখো  এবং   রাখতে  দিও
সবেরই  মূল্য  ধার্য  হয়ে  না  পৃথিবীতে
স্মৃতির  নুড়ির  মতো  নিত্য  বহমান
কিংবা  অতর্তিকে,
বিপন্ন   নাম  ধরে  ডেকো  এবং  ডাকতে  দিও.....
-----দুই
নাম  ধরে  যে  ডেকেছ  চিরকাল
তাই  তো  আমি  ঋণী
স্মৃতির  নুড়ি  সরিয়ে  খুঁজেছি
যদি  ভালো  করে  চিনি .
আমি  তো  ক্ষুদ্র ,ধরি  না  ক্ষমতা
চিরঋণী  হয়ে  থাকার
ভয়  পাই  মনে , যদি  তুমি  যাও
তোমাকে  পিছু  ডাকার  .
অথচ  দ্যাখো  পিছু  পিছু  যাই
নূতন  স্মৃতির  আশায়
কি  মনে  করি  অবুঝ  হয়ে


বোঝাতে  পারি  না  ভাষায়.....
উড়ে   যাব  নতুনের   খোঁজে
আয়নায়  পার্শ্বডানার   ছায়া
গোধুলি  লগ্নের  আহ্বান
সবুজ  পাহাড়  আমায়  ডাকে
পুরানো  তোমায়  জানাই  বিদায়


ঘরের   চৌকাঠের  ছবি  আর   মনে  পড়ে  না  

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৪

বন্ধুর চিঠি 

আজকে ব্যাঙ্ক এর ছুটি বলে আমাদের লাগোয়া ওয়ার্কস্টেশন এর চেহারাটাই আলাদা ,খা খা করছে লম্বা ওডিসি ,হাই পোস্ট অফিসার ম্যানেজার দের কেবিন গুলো,শুধু দেওয়াল ঘড়ি আর আইপি ফোনের ঘড়ির কাঁটা ছাড়া সবই নিথর বস্তু। মে আই কাম ইন স্যার ,জিজ্ঞেস না করেই অবলীলায় দরজা ঠেলে ঢুকে পড়তে পারবি,ফাইল পত্র যা আছে টেবিলে বা অন্য জায়গায় গোছা করে,সেগুলোতে চাইলে একটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারিস ,যদিও কিছুই বুঝবি না.যে দৃশ্য এক জানালা দিয়ে এক জন লোক ই শুধু দেখতে পায় ,কেবিন তার ওপর দখল আছে বলে ,আজ সে জানলার সামনে যে কেউ দাঁড়াতে পারে অবলীলায় ,পেন্স্ট্যান্ড এ রাখা মার্কের দিয়ে ইচ্ছেমত আঁকিবুঁকি কেটে নিতে পারিস ,বকার নেই কেউ,একটা এজিয়েমের ঘরে একটা বনসাই দেখলাম তবে মাটির বদলে রঙ্গীন আর b&W পাথর ভেজানো জলে ,চতচত নুঁড়ি গুলোকে একটু এদিকদিক নাড়িয়ে দিলাম,আচ্ছ কাল এই কেবিন এর মালিক এসে নিত্যদিনের মতো কলম পিসবে আর বেল বাজিয়ে কেরানি দেকে কাজ করবে,জানবে না আজকের সামান্য ঘটনার কথা,জানতে পারবে না.
বোধহয় ছিল না কারো মনে,পুরনো আলমিরার কোনে 
রাখা ছিল সেই চিঠি,লেখা হয়েছিল আমার নামে ,গোপনে 
আজ এলো আচমকাই হাতে,
খুলে দেখেছি,কত কথাই 
আছে তাতে ,আঁকাবাঁকা হাতের লেখা 
 শব্দগুলি নিরবেই রয়ে গেছে 
​আজও​,
হয়নি কখনো দেখা 
লেখা আছে,
​​
প্রত্যাশা,
​প্রত্যাশা আমার প্রাপ্য নয় 
আমি কার প্রত্যাশা রাখব 
নিজের প্রত্যাশাই  রাখতে পারিনি ​

প্রত্যাশা
করাই ভুল হয়েছে...

মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০১৪

আমি নিতান্তই একটি ছাপোষা ছেলে 
অশনি ঝলকে ,সজল পলকে
বর্ষার ঝাপটে ,জীবনের দাপটে
এগিয়ে যাওয়া হলো না ,চেহারা অবিন্যস্ত , চুল রুক্ষ
ফিরে আসাও হলো না ,দাঁড়িয়ে রইলাম মাঝপথে 
অনন্তকাল,
আমার দুঃখ......
আমি নিতান্তই একটি ভিতু ছেলে 
দীর্ঘশ্বাস খাতায় ,কান্না পাতায়
ভাবনা বিকল ,ধন্ধ শিকল
ব্যর্থতার চাদর জড়িয়ে বসে রইলাম
ব্যর্থতাই, জীবন সঞ্চয়
অবিশ্বাসী ঢেউয়ে হারিয়েছি নিজেকে আজ
আমার ভয় ......
আমি নিতান্তই একটি বোকা ছেলে
স্বপ্ন দিন ,স্বপ্ন রাত
স্বপ্ন সম্বল, স্বপ্নময়
বেঁচেছি স্বপ্নে,পেয়েছি স্বপ্ন ,স্বপ্নের
ঠিকানা নয়
মাখামাখি নিসঙ্গতার ভাঁজে ,আর কিছু নেই ,
বিভীষিকা
স্বপ্ন আমি আর কোনদিন দেখব না ,নিসিদ্ধ রইলো
এ মরীচিকা....

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০১৪

বৃষ্টি ভেজা পথে কাল হারিয়ে গেছিলাম 
শুকনো পাতার শব্দে যেন বেহালা বাজে 
পায়রা দুটি আমার দিকে তাকিয়ে ছিল 
নীলাভ দুটি শুভ্র নয়ন লালচে যেন 
সময় যেন হঠাত করে ফুরিয়ে গেল 
চোখটা আমার ধাধিয়ে গেল সবুজ আলোয়
সাগর তীরে একটি ঝিনুক কুড়িয়ে পাওয়া 
অভিধানে শব্দ বুঝি হয়নি লেখা ...

রঙ্গের আড়ালে

Three Colors trilogy (French: Trois couleurs, Polish: Trzy kolory) is the collective title of three psychological drama films directed by Krzysztof Kieślowski

হলুদ তুমি গোধুলিবেলা, ভাঙ্গা সময়ের সিঁদুরখেলা

অলীক তুমি সোনার কাঁটা বসন্তেরই উত্তমাশা

তাপসী বেশে তপোবনে বুঝি প্রথম দেখেছি তোমায়

কিন্ত পরিচয় কি দিয়েছিলে আমায়...

 

লাল তুমি রক্তবসনা, সূর্যালোকের রাজকন্যা

প্রবাল রঙের আলো, প্রানোচ্ছল অবাধ্য বন্যা

ক্যানভাসে আঁকা রক্ত পলাশে তোমায় দেখেছি কখনো

কিন্ত পরিচয় তো হয়নি তখনো..

 

নীল তুমি ময়ূরকন্ঠী, অকুল সাগর ঢেউ

ডাকবাক্সে রাখা তুলোটে খাম তুমি, কখনো খোলেনি কেউ

সেবার অরন্যে রৌদ্রছায়ায় তোমায় দেখেছি বোধহয়

কিন্তু হয়নি তো তখনও পরিচয়...

 

সাদা তুমি শীতের সকাল বরফের প্রান্তর

কখনা না লেখা ডায়রিতে তুমি প্রথম অচেনা পাতা

শাশ্বত তুমি জোছনা রাতের শীর্ষ সংকলন

রূপকথায় পড়েছি কি তোমার কথা,পরিচয় হবে কখন...

 

সবুজ তুমি অরন্যে হারানো অবুঝ একলা পাতা

দিকভ্রান্ত সদা হাস্যময়ী প্রেমের নতুন খাতা

দেশান্তরে একলা যখন পথ চলতে নামি

স্বপ্ন বালিকা সামনে তুমি, পরিচয় কি পাব আমি ?

 

পরিচয়? না হয় নাই হলো...

রঙ্গীন তুমি আমার জীবনে ইন্দ্রধনুষী আলো

পরিচয় যদি বা না হয় তোমায় বেসেছি ভালো

তোমায় চিনতে পেরেছি আজ

তুমি... আমি!



``````ছেড়ে চলে গেছ ,বলিনি কিছুই 
নিঃশব্দতায় কেটে গেছে কত মাস 
কেটে গেছে শীত, এসেছে বসন্ত 
বসে থেকেছি সেই জানালার ধারে ইজিচেয়ারে 
ডাগর চোখদুটি খালি ভেসেছে চোখে,
ব্যথায় ভেসেছে ফেনায়িত ঢেউ 
অফুরন্ত 

এড়িয়ে গেছ ,যেতে দিয়েছি 
ক্লান্ত জগৎ,ছিড়েছে ডানা 
অদৃশ্য শিকলে পাদুটি বাঁধা
কালো মানে হয়েছে সূর্যের আলো
ছুঁতে চেয়েছি প্রাণহারা হয়ে তার বাঁধানো ছবিটি
স্মৃতি হারায়েছি ভুলেছি সবই তোমায় ছাড়া
হারিয়েছি সব
নেই কোনো সাড়া

উপেক্ষা করেছ ,করতেই পার
বলিনি তোমায় কোনদিন যে
তোমার জন্য আমি বেঁচে আছি আজ
বলিনি তোমায় ভালো লেগেছিল
প্রথম দেখায়,প্রথম কথায়,প্রথম হাসি
ভালোবেসেছি প্রথম ছোয়ায়

আর না,বলব তোমায় সবকিছু খুলে
বলব তোমায়
বলব তোমায়
বলব তোমায়

বলা হয় না
বলা হয় না
বলা হয় না ..........````````````````````````````````````````````
অবুঝ আলোর শীতের সকাল,কুয়াশাঘেরা বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলাম
তুই অনেকক্ষণ আগেই হেঁটে মিলিয়ে গেছিস
দাঁড়িয়ে ছিলাম
একা,একা,একা,একা .....

একমাস গেল আজ,হারিয়ে গেছিলি,বলেছিলি ফিরবি না কোনদিন
করিস না অপেক্ষা,বলেছিলি বিদায় নিতে এসে
চমকে উঠিনি,কান্না পায়নি
চোখের কোন দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম তোর দিকে
স্বপ্ন,স্বপ্ন,স্বপ্ন,স্বপ্ন ......

ঝুলি কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়িনি,ভাসায়নি তরী সাগরে
ঘাড় গুঁজে কবিতা লিখিনি,ইচ্ছে হয়নি বৈরাগেও
বেঁচে থেকেছি,ভেবেছি হিমেল হাওয়ায়,শ্রাবন আকাশে
নিশ্ছিদ্র ঘুম এর মাঝে,তোকে
আশা,আশা,আশা,আশা ...

পেরিয়ে এসেছি বহুকাল,লহমা গুলি তাৎপর্যহীন গাছের মতো
কোটর থেকে উঁকি মেরে দেখে কখনো স্মৃতির কাশফুলের ছবি
ক্লান্তিরোদে,পুড়ে গেছে জীবনের মাটি,ছাইরঙা জলে ধুয়ে গেছে
তোর আবছা মুখের আঁকিবুঁকি
অদেখা রইলি ,এলি না ফিরে সত্যি সত্যি

অবুঝ আলোর শীতের সকাল,কুয়াশাঘেরা বাগানে দাঁড়িয়ে রইলাম এতকাল পর
তুই কতকাল আগেই হেঁটে মিলিয়ে গেছিস
দাঁড়িয়েই রইলাম
একা,একা,একা,একা ...

শুনলাম তুই ফিরে এসেছিস আবার
কিন্তু আমি যে হারিয়ে গিয়েছি .......
জ্বালাও শহর জ্বালাও গ্রাম 
জ্বালিয়ে দাও চিতার আগুন 
পোড়াও মানুষ সবাই মৃত 
পুড়িয়ে ফেলো রাত আর দিন 
পোড়াও আমায় বারে বারে আজ 
পুড়েও পুড়ি না,জ্বলেও জ্বলি না 
আগুন আঁচে বিভ্রান্ত 
আত্মা পুড়ছে তাও অবিশ্রান্ত ...
জ্বলে যাক জ্বলে পৃথিবীটা আজ 
জ্বলুক গাছপালা,জ্বলুক নদীর জল 
জ্বলে যাক আকাশ বাতাস,
ব্রহ্মান্ড জ্বলুক
জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাক ছাদনাতলা
ভালবাসা জ্বলে যাক
জ্বলে যাও তুমি
আর না
আমি দিকভ্রান্ত
পরিশ্রান্ত
ক্লান্ত...
প্রতিটি প্রহরে 
রাত্রে দুপুরে 
করেছি যে কাজ 
হারিয়েছি সময় 
কুড়িয়েছি ব্যস্ততা 
কথা বলেছি 
স্বর ফোটেনি ,
দিন সপ্তাহ মাস বছর 
উত্তর লিখেছি 
চিঠি লিখিনি,
ভালো আছ তো ?
স্বীকৃতি দিয়েছি ,

সত্যি ভালো আছি
কিন্তু বেঁচে আছি তো?
প্রশ্ন করেই চলেছি তোমাকে প্রতিদিন 
একটারও উত্তর পেলাম না আজ অব্দি 
তুমি নাকি বড়ই ব্যস্ত ..
শিকর গজিয়ে উঠেছে কত প্রশ্নের 
শ্যাওলা লেগেছে কত জিগ্যেস করা কথায় 
তবু তোমার সময় হয়ে ওঠেনি 
তুমি নাকি বড়ই ব্যস্ত ...
শহরটা বদলে গেছে কত তোমার উত্তরের অপেক্ষায় 
গানের স্বরলিপির কত খাতা গেছে হারিয়ে 
কবিতা হার মেনেছে তোমার উন্মাদ উদাসীনতায় 
তুমি নাকি বড়ই ব্যস্ত ....
সময় চলে গেছে সময়ের বাইরে
ঘড়ির কাঁটা আর দেখে না লোকে আজকাল
বসে আছি তোমার অপেক্ষায়,উত্তর দিতে যদি এস
এই অছিলায় তোমায় আবার দেখতে পাব
কিন্তু তুমি আসবে না
তুমি নাকি বড়ই ব্যস্ত ......

...আরও একটা জীবন ....

আর কোনো প্রশ্ন নেই তোমার কাছে
প্রশ্ন নেই নিজের কাছেও
হাথে নিয়ে আছি তোমার দেওয়া চিঠি
একটা নীল লেফাফা,একটি সাদা পাতা
লেখনি কোনো কথা
উত্তর তো দিয়েছ,তাও যথেষ্ট
কিছু লেখার সময় পাওনি
জানি,তুমি যে বড়ই ব্যস্ত .....
সেবার বসন্তে যখন তোকে প্রথম দেখি 
জুতোর ফিতে বাঁধতে ভুলে গিয়েছিলাম 
ঘুড়ি উড়ানো হয়ে ওঠেনি 
অঞ্জলির ফুল হাতেই রয়ে গেছিল সরস্বতী পূজায় 
তুই দাঁড়িয়ে ছিলি হলুদ শাড়ি পরে 
একবার ডাকলেও ডাকলে পারতি 
কথা রাখলেও রাখতে পারতি ..
কান পেতে রয়েছিলাম তোর্ কথার অপেক্ষায় 
এসেছিল যখন দোল,রাঙ্গা হয়েছিলাম 
তোর্ না করা দুষ্টুমি আর খুনসুটিতে 
আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়েছিলাম তোর্ নীরব আবির্ভাবে
হয়ে ওঠেনি খেজুর গুড় খাওয়া,
অবাস্তব আলোছায়ার রঙিন মায়াবেলা
রং মাখলেও মাখতে পারতি
কথা রাখলেও রাখতে পারতি ..
প্রবাসী মেঘেরা জল ঝরিয়ে ছিল
ভেজা মনে তোকে খুঁজতে বেরিয়েছিলাম
বেপাড়ায়,তোর্ ঠিকানায়,সেই বর্ষায়
কাকভেজা হয়ে ফিরেছিলাম বাড়ি
ফেলে গেছিলাম ছাতা মনের ভুলে
সেদিন রাতে জাগলেও জাগতে পারতি
কথা রাখলেও রাখতে পারতি ..
নীল মনখারাপ করা সরতের দুপুর,পুজো শেষ
ঠিকানা বদলেছিল তোর্ বাড়ির,শহরের
চায়ে চিনি দিতে ভুলেছিলাম সেদিন
আজন্ম অচেনা থাকতে হবে তোর কাছে
একটু একটু কি নিজের কাছেও নয় ?
একবার রাগলেও রাগতে পারতি
কথা রাখলেও রাখতে পারতি ...

দিন এসেছে চলে গেছে,পরিযায়ী পাখি
আর স্বপ্নঝরা জীবনের গান শুনিয়ে
আমি আজও ভুলে যাই চায়ে চিনি দিতে
খেজুর গুড় রাখা থাকে তোলা
জুতোর ফিতে বাঁধতে ভুলি আজও
ছাতার কথা মনে পরে ভিজে যাওয়ার পর
আরো কত কিছু যে ভুলে যাই রোজ
জানি না ...
ফিরে আসলেও আসতে পারতি
কথা রাখলেও রাখতে পারতি ....
কখনো কাজল,কঞ্জনয়ন 
কতিপয় কিছু কথোপকথন 
ছেড়ে যেতে হয় 
ভালো লাগে না ..
কখনো বনানী বনাশ্রম 
বকুনি,বচসা,ভুল ব্যাকরণ 
চলে যেতে হয় 
ভালো লাগে না ...
কখনো পীড়াপীড়ি,পুঞ্জমেঘ বারিধারা 
পিপাসু পাখি,নিরুপায়,বাসাছাড়া 
আমিও বুঝি ..
প্রতিবার ফেলে আসি
ভালো লাগে না ...
কখনো হাসির বাঁধভাঙ্গা ,হরকরার হদিস
হরিনাক্ষী হরিতাল,হয়রানির জিনিস
প্রতিবার চলে যেতে হয়
ভালো লাগে না ..

তুই,তোর্ চোখ,তোর্ হাসি,তোর্ কান্না
তোর্ ঘুম,তোর্ স্বপ্ন,তোর্ দাবি ,তোর্ বায়না
ছেড়ে প্রতিবার ...
ভালো লাগে না ..
ভিজে শ্রাবনের বিকেলবেলায় ,গন্ডিকাটা ছেলেবেলায় 
হেলায়ফেলায় হারিয়ে যাওয়ায়,মেঘের খেলায় 
তুমি দিয়েছিলে দেখা প্রথম 
কিউমুলো নিমবাস !!
পেয়েছিলাম দেখা তোমার পশ্চিমের কাঠের বারান্দায় দাঁড়িয়ে 
কিউমুলো নিমবাস !! 
তোমার সাদায় কালোয় ,নরম আলোয় পেয়েছিলাম রোমাঞ্চ 
হয়েছিল শিহরণ 
রেখেছিলাম ঠিকানা তোমার,তোমার কাছে যাব ....

কিউমুলো নিমবাস
অনেক অনেক বছর কেটেছে
ভেবেছি,ভুলেছি তোমায়,আবার ভেবেছি
মেতেছি তোমার জলে,
তুমি মাঝে মাঝে দূর থেকে উঁকি মেরে গেছ
করনি যোগাযোগ,নিঃশব্দে চলে গেছ
তোমার রঙের ছবি আঁকার খাতায়,
কবিতায় তোমার অশ্রু পেয়েছি রোজ
পাইনি তোমার কোনো খোঁজ ...

কিউমুলো নিমবাস
বলনি কেন এতদিন ?
আমার কাছেই ছিলে তুমি,তোমার সৌরভ বিন্দুতে কেটেছে কত রাত
ভিজেছে মন বারেবারে হারিয়েছি,ভালোবেসে
বলনি তো,সেই দিন তুমি বাসা বেঁধেছিলে
আমারি চোখের কোলে,
অবশেষে ....