বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২

লাভ ইন দ্য এয়ার


 প্রেম জিনিসটা আপনাদের কেমন লাগে? দারুণ লাগে... না পুরোটাই ন্যাকামি বলে মনে হয়? কার কার মনে হয়, প্রেমের গল্প পড়ার চেয়ে রহস্য উপন্যাস পড়া ঢের ভালো? দিব্যি একটা ঘোরালো সংকেত ফংকেত থাকবে, মারকাটারি স্মার্ট গোয়েন্দা থাকবে, সঙ্গে গুপ্তধর উদ্ধার বা গুপ্তচরবৃত্তির ফোড়নও থাকবে একটু, রোমাঞ্চে গা শিরশির করে উঠবে একেবারে! কিন্তু এই গল্পে যদি একখান প্রেম কাহিনি ঢুকে যায়? তাহলে? কতজন অ্যাপ্রুভ করবেন? আর কতজন নাক সিঁটকে ভাববেন, "ফের এসব আনরিয়েলিস্টিক ব্যাপার স্যাপার?"

প্রেম ব্যাপারটাই আনরিয়ালিস্টিক... কী বলেন? কেউ কেউ আবার মানবেন না। লাভ ক্যান ওয়ার্ক ইন মিস্টেরিয়াস ওয়েজ, বাট ইট রিয়ালি ওয়ার্ক্স ইউ নো! ইন রিয়াল লাইফ।
বড্ড ভুলভাল বকছি তো? ঠিক হ্যায়, এইবার না হয় গল্পে আসি। গল্প অবশ্য নয়, বিলকুল সত্যি ঘটনা। তবে ঘটনাটাকে ঠিক কোন জনরাতে ফেলতে চান, সেটা আমি আপনাদের ওপরেই ছেড়ে দিলাম। তা আমাদের গল্পের প্রধান নায়ক (নায়িকা বলা কি সেক্সিস্ট হবে? কাহিনির প্রোটাগনিস্ট তো ইনিই বটেক) হলেন সিন্থিয়া রিগস। তা সিন্থিয়া হলেন একজন নামকরা রহস্য রোমাঞ্চ লেখিকা। (তাঁর সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্রের নাম হল ভিক্টোরিয়া ট্রাম্বেল। বিরানব্বই বছরের এই বৃদ্ধা মনেপ্রাণে নিজেকে কুড়ির ছুঁড়ি ভাবেন এবং তাঁর উইনইয়ার্ডে ঘটিত রহস্যের সমাধান করে থাকেন মিস মার্পেলের সমান দক্ষতায়।) তবে সিন্থিয়া লালমোহনবাবুর মতো ক্যাবলাকান্ত নয় মোটেও, বরং ব্যক্তিজীবনে তিনি প্রায় ফেলুদার কাছাকাছি। তাঁর বায়ো দেখলে চোখ কপালে তুলতে হয়। কিন্তু রেজিউমেতে হাত দেওয়ার আগে বরং তাঁর বসবাসের জায়গাটার কথাই বলা যাক।
সিন্থিয়া থাকেন আমেরিকার বিলকুল পূর্ব প্রান্তে, নিউইয়র্ক থেকে সে জায়গায় দূরত্ব প্রায় কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু জায়গাটা ডাঙায় নয়, জলে। আজ্ঞে! ওয়েস্ট সালসবারি বলে এক চিলতে এক দ্বীপ, সে দ্বীপের মার্থাস আইল্যান্ডে তাঁর পৈতৃক বাড়ি, সেখানে থাকার পাশাপাশি একটা বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্টও চালান সিন্থিয়া। নিজেকে বলেন উইনইয়ার্ড উম্যান। বোঝাই যায়, তাঁর চরিত্রও আসলে তাঁরই আদলে তৈরি, কারণ দুজনের বয়সও প্রায় এক। এত জনপ্রিয় লেখিকা হয়ে বয়সকালে এই প্রত্যন্ত দ্বীপে থাকার কী দরকার... এ প্রশ্ন করলে বৃদ্ধা সিন্থিয়া চোখ বুজে হাসেন, এবং হাসতেই থাকেন। অবশ্য হাসারই কথা! দরকারের কথা ভেবে তিনি জীবনে কোন কাজটাই বা করেছেন?
সিন্থিয়ার চরিত্রে প্রথম থেকেই দুরন্তপনা ঝিলিক দেখেছিলেন তাঁর বাবা মা। মা প্রিন্টমেকার ছিলেন, বাবা ছিলেন কবি। রিগস পরিবার সেই চোদ্দ পুরুষ থেকে আইল্যান্ডর্স, মানে ওয়েস্ট সালসবারি দ্বীপেই তাঁদের বাড়িঘর, জমিজমা ছিল। তাঁদের ছেলেমেয়েরাও যথেষ্ট স্বাধীনতা পেয়ে নিজের মতো করে বড় হত। কিন্তু সিন্থিয়ার মতো জীবন আগে কারো হয়েছে বলে জানা নেই। এই মেয়ে ছোটবেলা থেকে যেমন চঞ্চল, তেমন বুদ্ধিমান। স্কুলের পাট মিটিয়ে যখন সে কলেজে পা দিল, তাঁর নানা বিষয়ে আগ্রহ। জিওলজিতে ডিগ্রি পেয়েও সে গতানুগতিক লাইনে পা বাড়াল না, বরং জয়েন করে বসল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। সেখানেই শেষ নয়, নানান বিষয়ে পড়াশোনা আর লেখালিখি করার সুবাদে স্মিথসোনিয়ান ইন্সটিটিউট থেকে ডাক আসে, আন্টার্কটিকায় একটা প্রজেক্টে যেতে হবে। তা সিন্থিয়া একপায়ে খাড়া।
দক্ষিণ মেরু তো নিমিত্ত মাত্র, সিন্থিয়া কোথায় না দিন কাটিয়েছেন আর কোন কাজ না করেছেন? মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাজে সাহায্য করেছেন, সরকারি আমলাদের কান ধরে প্রকৃতি বিজ্ঞান শিখিয়েছেন, আমেরিকার পেট্রোলিয়াম ইন্সটিটিউটে পাবলিক রিলেশন অফিসারের চাকরি করেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ম্যারিন ল্যাবে কাজ করতে গিয়ে সামুদ্রিক প্রাণীদের স্টাডি করেছেন। একের পর এক অভাবনীয় অ্যাডভেঞ্চারে যুক্ত হয়েছেন সিন্থিয়া, কিন্তু নতুন জিনিস শেখার আগ্রহ কখনও হারাননি। আন্টার্কটিকায় দু মাস ধরে প্রজেক্ট চালানোর সময় ম্যারিন নেভিগশন শিখেছিলেন, সরকারি কাজ করার ফাঁকে ক্রিপ্টোগ্রাফি শিখেছেন। দরকারে অদরকারে সেই বিদ্যা কাজেও লাগিয়েছেন।সমুদ্রবিজ্ঞান কাজে এসেছে বোট চার্টরিংয়ের দায়িত্ব নিতে গিয়ে। ভাবতে পারেন, ভদ্রমহিলা এই কাজ চলাকালীন বারো বছর একটা চল্লিশ ফুটের হাউসবোটে কাটিয়েছিলেন।
এইসব অ্যাডভেঞ্চারের মধ্যে প্রেম নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় বিশেষ ছিল না, আগ্রহও ছিল না সিন্থিয়ার। হ্যাঁ, ক্ষণিকের দুর্বলতায় পড়ে একটা সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন, বিয়েও হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ পাঁচটা সন্তানের মা হওয়া সত্ত্বেও প্রেম যে ছিল না সে সম্পর্কে, সেটা সিন্থিয়া নিজে খোলামেলা ভাবে স্বীকার করেছেন পরে। ছেলেমেয়েদের মুখ চেয়ে প্রথমে কিছু করতে পারেননি, কিন্তু পঁচিশ বছর পর সেই অসুখী বিয়েতে বিচ্ছেদ টেনে তিনি ঠিক করেই ফেলেছিলেন, প্রেমের মতো ফালতু জিনিস দুনিয়ায় নেই। এই সম্পর্কে না জড়ালে আরো কত কত অ্যাডভেঞ্চার করা যেত জীবনে।
শেষ জীবনে এসে তিনি ঠিক করেন, এইবার বই লেখা যাক। তবে বই লেখা মানে নাম কে ওয়াস্তে লেখা নয়, সিন্থিয়া যা করেন মনপ্রাণ ঢেলে করেন, ফলে সিন্থিয়া সোজা ভর্তি হলেন ক্রিয়েটিভ রাইটিং প্রোগ্রামে। ছয় মাস পর দেখা গেল, তাঁর শিক্ষকরা তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। শুধু সহজাত লেখার হাত দেখে নয়, তাঁর প্যাশন দেখে। সিন্থিয়া ছয় মাসে ডিটেকটিভ লিটারেচার গুলে খেয়েছেন প্রায়, এক একজন লেখকের রাইটিং স্টাইল বিশ্লেষণ করে নোট বানিয়েছেন, রহস্য রোমাঞ্চ জনরার ভুগোল ইতিহাস সব আত্মস্থ করে ফেলেছেন। প্রথম যখন নিজে উপন্যাসের খসড়া লিখলেন, সবাই তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক, কয়েক বছরের মধ্যেই সিন্থিয়া লেখালিখির জগতে নাম করে ফেললেন। সবাই জেনে গেল, অমুক দ্বীপে আশি বছরের বেশি বয়সের এক দিদা থাকে, সে তুখোড় গোয়েন্দা কাহিনি লেখে।
সব ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু গোলমাল বাধল ২০১২ সালের শেষ দিকে। সিন্থিয়ার ঠিকানায় একটা চিঠি এসে উপস্থিত হল। তাতে কিছুই নেই, কয়েকখান ছাড়াছাড়া অক্ষর, সেই অক্ষরের মাথামুণ্ডু নেই। তাহলে? এমন আজগুবি জিনিস পাঠানোর মতলব কী? ফ্যানমেল হোক বা হুমকি চিঠি, যাকে পাঠানো হয়েছে সে বুঝতে না পারলে লাভটা কী? তা সিন্থিয়া লেখালিখি আর বি অ্যান্ড বি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, চেনা কারো চিঠি নয় বলে প্রথমে মনযোগ দিয়ে দেখেননি। কাজকম্মো মিটতে যখন তিনি না পড়া চিঠিগুলো নিয়ে বসলেন, তখন সেই চিঠিও বেরিয়ে পড়ল। সেই অদ্ভুত চিঠি। তুলোটে কাগজে লেখা কিছু অক্ষর, যার কোনো মানেই নেই। আর কেউ হলে পাগলের প্রলাপ ভেবে ফেলে দিত, কিন্তু সিন্থিয়া আর চারজনের মতো নন। তিনি ভুঁরু কুঁচকে সেই লেখার দিকে তাকিয়ে রইলেন, ধীরে ধীরে তাঁর চোখের দৃষ্টি নরম হয়ে এল। একসময় তিনি চিঠিটা তুলে বুকের কাছে ধরলেন, তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, "ও মাই লাভ!" তাঁর চোখের সামনে তখন ষাট বছর আগের কিছু স্মৃতি ঘোরাফেরা করে চলেছে।
ছেলেটার নাম ছিল হাওয়ার্ড। হাওয়ার্ড অ্যাটেবেরি। তুখোড় বুদ্ধিমান, তেমনই উপস্থিত বুদ্ধি। ক্যালিফোর্নিয়া ম্যারিন ল্যাবে কাজ করার সময় আশেপাশের ভোঁতা লোকজনদের দেখে যখন যুবতী সিন্থিয়া ক্রমে কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন, তখন হাওয়ার্ডের সঙ্গে দেখা। আলাপ যে কখন বন্ধুত্ত্বে পরিণত হল, সিন্থিয়া বুঝতেও পারেননি। দুজনে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিত নানা বিষয় নিয়ে, আবার পিএনপিসিও করত ডিপার্টমেন্ট এর মোটাবুদ্ধি লোকজনের। কিন্তু সামনাসামনি তো আর করা যায় না, তাই দুজনে কোডে বাক্য চালাচালি করত। হাওয়ার্ড আর সিন্থিয়া, দুজনেই হেঁয়ালিতে সিদ্ধহস্ত ছিল, নিজস্ব গোপন কোডে কথোপকথন করাটা প্রায় নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের কাছে। সিন্থিয়ার স্পষ্ট মনে আছে, অদ্ভুত মায়াভরা চোখ ছিল ছেলেটার, কিন্তু আর পাঁচজনের মতো কিন্তু তাঁর প্রেমে পড়েননি সিন্থিয়া। নিজে প্রেম প্রস্তাব পেলেও অবশ্য হেসে উড়িয়ে দিতেন সে সময়ে। হাওয়ার্ড অবশ্য কোনোদিন তেমন কিছু করেনি, একটা কফি ডেটের জন্যও জিজ্ঞেস করেনি। তারপর সময়ের নিয়মে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, হাওয়ার্ডের কথা আর মনেও ছিল না।
আজ ষাট বছর পর, সেই হাওয়ার্ডের হাতের লেখায় পাওয়া খাপছাড়া অক্ষর দেখতে পেলেন সিন্থিয়া। আর অক্ষরের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেখতে পেলেন অতীত জীবনের সেই কোড, যা তাঁকে উদ্দেশ্য করেই লেখা হয়েছে। আর কেউই বুঝবে না, কিন্তু এই কোডের অর্থ সিন্থিয়া ঠিকই বুঝবেন। হাওয়ার্ড লিখেছে...
"আই হ্যাভ নেভার স্টপড লাভিং ইউ!"
ফ্যান মেল বা হুমকি চিঠি নয়, এক লাইনের একটা প্রেমপত্র। লাভ লেটার। এমন প্রেম, যা কিনা সামনাসামনি এক্সপ্রেস করার সাহস হাওয়ার্ডের ছিল না। যে প্রেমের কথা জানাতে ছেলেটা সারাজীবন লাগিয়ে দিল। ষাট বছর ধরে এই না বলা প্রেম বুকে নিয়ে ঘুরছে ছেলেটা! প্রেম! এই সেই প্রেম, যা কিনা সিন্থিয়া দু' চক্ষে দেখতে পারেন না। সিন্থিয়ার চোখ থেকে জল গড়াতে লাগল। এত প্রেম আসে কোত্থেকে? হাওয়ার্ড! কী করলে তুমি?এই প্রেমের কথাটা ভুলে যেতে পারলে না? হতচ্ছাড়া এ-ই প্রেম!
আশি কাটিয়ে ফেলা সিন্থিয়ার সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল। কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি বুঝলেন, তিনি নিজেও প্রেমে পড়েছেন। আর নিস্তার নেই। বয়সকালের প্রেম নয়, এ যেন কৈশোরের উদ্দাম প্রেম। সিন্থিয়া রিগস, তুমি একেবারে উত্থালপাত্থাল প্রেমে পড়েছ, আর পড়েছ বেঘোরে...
তাহলে এইবার?
সিন্থিয়া গোয়েন্দা গল্প লেখেন, হাল ছাড়বার পাত্র তিনি নন। গোয়েন্দাগিরি করে হাওয়ার্ডের ঠিকানা জোগাড় করলেন একসময়, ইয়াবড় এক চিঠিও লিখে ফেললেন। উত্তরও এল হাওয়ার্ডের তরফ থেকে। আবার চিঠি চালাচালি শুরু হল দুজনায়। ফেলে আসা জীবনের কথা। হাওয়ার্ড এর স্ত্রী অনেক আগেই মারা গিয়েছেন, ছেলে আছে। সিন্থিয়ার স্বামী থেকেও নেই, তাঁর মেয়ে কবিতা লেখে। সেই কবিতা শোনানোর নাম করেই পদ্য দেওয়া নেওয়া শুরু হল। বাদ গেল না কোড ওয়ার্ড আর ক্রিপ্টোগ্রাফিও। আবার শুরু হল প্রেম অপ্রেমের সংকেত বিনিময়। বছরখানেক পর সত্যিই যখন দুজনের দেখা হল, দুজনের মুখেই হাসিকান্নার আলোছায়া। হাওয়ার্ড হেসে বললেন, "আমি জানতাম, তুমি গোয়েন্দা গল্প লিখলে নাম করবে! ইওর কোডস ওয়্যার টু গুড!"
সিন্থিয়ার বিস্মিত চোখের সামনে হাওয়ার্ড খুলে ফেললেন এক তোরঙ্গ। সিন্থিয়ার লেখা প্রতিটা কোড সেখানে যত্ন করে রেখে দিয়েছেন বৃদ্ধ হাওয়ার্ড। মনে মনে হয়তো তিনি জানতেন, তাঁর না বলা প্রেমের অনুভূতিগুলো ওই হলদেটে হয়ে আসা কাগজে গচ্ছিত আছে চিরকালের জন্য। এ-ও তো এক রহস্য। যার সমাধান করতে হলে গোয়েন্দাকে খবর পাঠাতে হবে। খবরটা পাঠিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু কেস নিজেই সলভ হয়ে গেছে।
সেই বছরেই বিয়ে হয়েছিল ডক্টর হাওয়ার্ড অ্যাটেবরি আর সিন্থিয়া রিগসের। কয়েক বছর একসঙ্গে কাটানোর পর হাওয়ার্ড বিদায় নিয়েছেন। সিন্থিয়া আজও পুরোদমে জীবনের অ্যাডভেঞ্চারে মেতে আছেন। শুধু প্রেম সম্পর্কে মতামত বদলে গিয়েছে এই গোয়েন্দা লেখিকার।
আচমকা কী বদলে গেল? এই কথা তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, "I'm always looking for wonderful mysteries and this seemed to be best one. Love is the greatest mystery in many ways. And You know, love is a also a great place to spend the rest of your life.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন