ভূতের বই যদি পড়তেই হয়, তাহলে এরকম ভূতের বই পড়াই ভালো। কিন্তু মুশকিল হল, এটা ঠিক সে অর্থে ভূতের বই নয়। সাইকোলজিকাল থ্রিলার বা ফ্যান্টাসিও নয়। কিন্তু এমিলি ক্যারলের এই মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া অসামান্য গ্রাফিক নভেলটা পড়ে যে আপনি ভূত দেখবেন তাতে সন্দেহ বিশেষ নেই। আমিও দেখেছি। ক্যারলের আঁকা তো যাকে বলে 'স্টানিং' আর্টওয়ার্ক, নিশ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে থাকতে হয় মাঝেমাঝে, তখন গল্পের কথা মাথা থেকে বেরিয়েই যায়। কিন্তু একবার গল্পটা শেষ হয়েছে, আমিও খুশিমনে বালিশে মাথা দিয়ে পরদিন বিয়েবাড়ি খাব বলে তৈরি হচ্ছি, এমন সময় আমার মাথা চিড়চিড় করে উঠল, আমি সত্যি সত্যি ভূত দেখার মতো লাফিয়ে উঠে ফের বইটা উল্টেপাল্টে দেখলাম, আর তারপরেই আমার গা শিরশির করে উঠল। এটা কী পড়লাম রে ভাই? গোদা বাংলায়, হোয়্যাট দ্য ফাক ডিড আই জাস্ট রেড?
'গেস্ট ইন দ্য হাউস' অ্যাবির গল্প। অনেক দেরি করে এক ভালোমানুষ ডেন্টিস্টের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে, তার আগের স্ত্রী শীলা মারা গিয়েছে। সে ছবি আঁকত। তাদের এক মেয়েও আছে, মেয়েকে একটু চোখে চোখে রাখবে, এছাড়া অ্যাবির কাছে আর কিছুই চাওয়া নেই তার বরের। ধাদ্ধাড়া গোবিন্দপুর না হলেও তারা একটু আউটস্কার্টে থাকে, বাড়ির পিছনে একটা বড় লেক। লোকজন বিশেষ নেই। সেই বাড়িতে এসে অ্যাবি আচমকা ভূত দেখতে শুরু করে। বহুস্তরীয় কাহিনি, বই জুড়ে ইস্টার এগ ছড়ানো, সে প্যানেলের সংলাপে হোক বা ছবির আঁচড় আর রঙে। মোদ্দা কথা, বইটা আপনি যা ভেবে পড়তে চলেছেন, সেটাকে অতিক্রম করে আরো বহুদূর ছড়িয়ে যাবে।
গ্রাফিক নভেলে যে ঠিক কীরকম কাজকর্ম হচ্ছে, বোঝার জন্য এই বইটা পড়ে ফেলুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন