কোরিয়ার সাহিত্যিকদের মধ্য চো নাম জু আজকাল তুমুল জনপ্রিয়। তাঁর লেখা প্রথম দুটো বই বেশ সাড়া ফেলেছে, আর তিন নম্বর বই 'কিম জিয়োয়ুং বর্ন ১৯৮২' তো ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে মুড়িমুড়কির মতো বিকোচ্ছে। জনপ্রিয়তা এলে সঙ্গে বিতর্কও আসবে, এই বইটা নিয়েও দুনিয়ারাজ্যের ক্রিটিকরা দু' ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। অনেকের মতে 'কিম জিয়োয়ুং বর্ন ১৯৮২' মডার্ন ফেমিনিন লিটারেচারের মাইলস্টোন, আবার অনেকে এটাকে উপন্যাস বলে মানতেও নারাজ। কোরিয়ার থ্রিলার নিয়ে আমরা যতই নাচানাচি করি না কেন, সেখানে আবার সামাজিক অসঙ্গতি আর স্যাটায়ার নিয়ে লেখাই জনপ্রিয় হয় বেশি। সেইদিক থেকে দেখতে গেলে যে এই বইটা নিয়ে যে সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মহৎ সাহিত্য হোক বা না হোক, লেখাটা আক্ষরিক অর্থেই কোরিয়ার আর্থ সামাজিক মহলে বদলের সূচনা করেছে। জেন্ডার ইকোয়ালিটির জন্য কিছু প্রয়োজনীয় আইনও তৈরি হয়েছে এই বইটা প্রকাশ হওয়ার পর, কিন্তু সে কথা থাক। মোট কথা, বইটা ঠিক কেমন?
শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১
কোরিয়ার সাহিত্য- জনপ্রিয় একটি বই
সত্যিই বলছি, আমি জানি না।
কিম জিয়োয়ুং বিবাহিত, তার একটা ছোট্ট মেয়ে আছে। চাকরি ছেড়ে আপাতত সে মেয়ের দেখাশুনা করছে। বর আইটিতে কাজ করে, টেনেটুনে চলে যাচ্ছে। এমন সময় একদিন কিম অবিকল তার মায়ের গলায় কথা বলতে শুরু করে। বর বিশেষ পাত্তা দেয়নি, কিন্তু দিন কয়েক যেতে না যেতেই তার মধ্যে প্রাক্তন প্রেমিকার ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। এরকম কয়েকটা এপিসোডের পর কিমের বর ভয় পেয়ে তাকে থেরাপিস্টের কাছে নিয়ে যায়। বাকি বইটা আর কিছুই নয়, কিমের শৈশব, কৈশোর আর যৌবনের কথা।
মাত্র ১২০ পাতার একটা বই। তাতে গল্প বলতে একটা মেয়ের বড় হয়ে ওঠা ছাড়া প্রায় কিছুই নেই। যা আছে তা হল নিঁখুত ভাবে উপস্থাপিত কিছু সোশ্যাল প্র্যাক্টিসের কথা আর মেয়েদের ভোগান্তির বর্ণনা, যা পড়লে রাগে গা চিড়চিড় করে। তখন আর বইয়ের ভালো মন্দের কথা মনে থাকে না। আমি ফেমিনিজম লিটারেচার সম্পর্কে প্রায় অজ্ঞ, নারীবাদী মানসিকতা সম্পর্কে কিছুই বলা আমার মানায় না। ছেলে হয়ে জন্মেছি বলে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার বহু সংস্কার আমার মাথায় গেঁথে গেছে অজান্তেই। এই সাবলিমিনাল হিপোক্রেসি আমাদের প্রত্যকের একচেটিয়া, তাই ফেমিনিজম নিয়ে কথা না বলাই ভালো। কিন্তু যে কথাটা বইটায় ভালো লাগল, সেটা হল প্রতিটা স্টেটমেন্টই এসেছে যুক্তিনির্ভর হয়ে, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে। পাশাপাশি হার্ড স্ট্যাটিস্টিক্স-এর পরিসংখ্যানও আছে। তাতে গল্পের লাভ হয়েছে না ক্ষতি বলতে পারব না, কিন্তু সেই জন্যই এই বইটা এত এত পাঠকের সঙ্গে কানেক্ট করতে পেরেছে বলে আমার বিশ্বাস।
যখন তার বড় বোন কিম এনুয়োং জন্মাচ্ছে, তার ঠাকুমা তার মাকে কর্নার করছে না, কিন্তু তার আন্তরিক কথাবার্তার ধরন দেখে আমার মাথা গুবলেট হয়ে গেল।
When Kim Eunyoung was born, Oh Misook held the infant in her arms and wept. ‘I’m sorry, Mother,’ she’d said, hanging her head.
Koh Boonsoon said warmly to her daughter-in-law, ‘It’s okay. The second will be a boy.’
When Kim Jiyoung was born, Oh Misook held the infant in her arms and wept. ‘I’m sorry, little girl,’ she’d said, hanging her head.
Koh Boonsoon repeated warmly to her daughter-in-law, ‘It’s okay. The third will be a boy.’
'থার্ড' কে কিমের মা আগেই স্কিপ করতে বাধ্য হয়েছিল, কিন্তু চার নম্বর অবশ্যই ছেলে ছিল। এর বহু বছর পর কিম যখন কন্যাসন্তানকে জন্ম দেয় তার মাও একই রকম ভাবে বলে, "It’s okay. The second will be a boy.’
ঋতুমতী হওয়ার পর যখন কিম ব্যাথায় কাতরাচ্ছে, লেখা আছে-
As Jiyoung lay on her stomach on the floor to do homework, she clutched her cramping lower abdomen and repeated to herself, ‘I don’t understand. Half the population in the world goes through this every month. If a pharmaceutical company were to develop an effective pill specifically for menstrual cramps, not the “pain medication” that makes you sick, they would make a fortune.’
Her sister filled a plastic bottle with hot water, wrapped it in a towel and passed it to her. ‘You’re right. In a world where doctors can cure cancer and do heart transplants, there isn’t a single pill to treat menstrual cramps.’ Her sister pointed at her own stomach. ‘The world wants our uterus to be drug-free. Like sacred grounds in a virgin forest.’
এরকম নানা জায়গায় নানা ছোটখাটো ঘটনা আছে, ব্যতিক্রম বাদে বেশিরভাগই আমার কাছে আরোপিত বলে মনে হয়নি। কোরিয়ার সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়েও কিছু কথা জানা যায় মাঝে মধ্যে, যদিও মেয়েদের কথাই প্রধান। লেখিকা জানিয়েছেন বেশিরভাগ অভিজ্ঞতাই তাঁর নিজের জীবনের, সে নিয়েও প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। বিয়ের একমাস পর কিম বাড়ি ফিরে দেখে তার বর বিয়ে রেজিস্টার করার আইনি কাগজ নিয়ে বসে আছে। জিওয়ুং হেসে ফেলে। তার পরের অনুচ্ছেদ এখানে তুলে দিলাম।
‘What’s the rush? We had a wedding and we live together. Nothing will change because of one document.’
‘It changes how we feel.’
Jiyoung had been oddly moved that he was in a rush to make the marriage legal. She’d felt good, good and elated and buoyant, like something lighter than air was filling her up in the lungs or stomach. Daehyun’s answer to her question pricked her heart like a short, fine needle and made a microscopic hole. The air escaped slowly, little by little, and brought her back down. She didn’t think legal procedures changed how she felt. Was Daehyun more committed for wanting to make the marriage legally binding, or was she more dedicated for thinking she’d always feel the same whether they were official or not? Jiyoung saw her husband in a new light – more dependable, yet oddly more alien.
জিয়োয়ুং জানত না ফর্ম ভরতে গিয়ে সে বার বার আটকে পড়বে। কী হয় সেটা না জানিয়ে লাস্ট কয়েকটা লাইন এখানে দিলাম-
The world had changed a great deal, but the little rules, contracts and customs had not, which meant the world hadn’t actually changed at all. She mulled over Daehyun’s idea that registering as legally married changes the way you feel about each other. Do laws and institutions change values, or do values drive laws and institutions?
আর কিছু বলছি না। শুধু বলব, বইটা পড়ুন। ভালো সাহিত্য হোক না হোক, কিছু বই পড়া দরকার। মাত্র ঘন্টা তিনেক লাগবে। এইটুকু দেওয়াই যায়।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন