শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১

বৃষ্টিযাপন ১

 


#বৃষ্টিযাপন

সকাল থেকে বৃষ্টি পড়ছে। টুপটাপ, ঝিরিঝিরি, ঝমঝম। আমার পোয়াবারো, আহ্লাদে আটখানা হয়ে বিছানায় গড়াগড়ি দিচ্ছি। রোদ দেখলেই আমার মাথা গরম হয়, মেজাজ যায় চটকে। এমন ফুটো কপাল, ওই আতাক্যালানে রোদেপোড়া দিন নিয়েই বছর কেটে যায়। বৃষ্টির দেখা আর পাওয়া যায় না। আজ অবশেষে বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে।

এমন দিনে কাজকর্ম সব স্টপ। চায়ের পর চা হবে, দুপুরবেলা খিচুড়ি। সে সব পাট চুকে গেছে। বিকেলের মেনুতে রাহুল দেব বর্মন, চপ মুড়ি আর দেশে বিদেশে রেখে দিয়েছি। হুঁ হুঁ বাবা! মাহৌল সে কম্প্রোমাইজ নেহি!

আপাতত ল্যাদ খেতে খেতে আরেকটা প্রিয় বই পড়ছি। এই এক বই, যা পড়ে প্রথম প্যারিসের প্রেমে পড়া। তার পর থেকে প্যারিস নিয়ে আমার আগ্রহ বেড়েই চলেছে। শুধু প্যারিসের কথা আছে বলে কত বই পড়লাম, কত সিনেমা দেখলাম। বৃষ্টিপাগল হয়ে জন্মেছি, পড়তে গিয়ে অবশেষে প্যারিসপাগল হলাম। নিজের সঙ্গে চুক্তি আছে, প্যারিস নিয়ে লেখা একটা বই অন্তত বছরে পড়তেই হবে। ছবির দেশে কবিতা দেশে থেকে দ্য পিয়ানো শপ অন দ্য লেফট ব্যাঙ্ক, এই মুগ্ধতার শেষ নেই। লং ডিস্ট্যান্স রিলেশনশিপ না করে সোজা স্যান নদীর তীরে গিয়েই ডেরা জমাতাম, যদি না বেচারারা দিনের পর দিন ওই বাগেত, চিজ আর ওয়াইন খেয়ে চালিয়ে দিত। ফরাসিরা আসলে হয় যুদ্ধ নয় শিল্প নিয়েই ব্যস্ত ছিল তো, আমজনতার জন্য ভ্যারাইটি রান্না শিখে উঠতে পারেনি। ইম্প্রেশনিস্ট শিল্পী বা সাহিত্যিকরা অনেকেই প্রায় না খেয়েই দিব্যি খোশমেজাজে থাকত, ও সব তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে কস্মিনকালেও চিন্তা ছিল না।

বৃষ্টির দিন ভূতের বই ছাড়া যদি অন্য কিছু পড়তে হয়, তুলে নিতে পারেন। সঙ্গে অবশ্যই এক কাপ চা বা কফি। এই মেঘলা দিনে একলা না থেকে বরং প্যারিস থেকে ঘুরে আসুন, তাও বিছানায় শুয়ে ঠ্যাং নাচাতে নাচাতে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন