দুনিয়ায় কী সব কাজ হচ্ছে, দেখে মাঝেমধ্যে মাথা খারাপ হয়ে যায়! বিশেষ করে গ্রাফিক নভেলে। প্রতি বছর কয়েকটা কাজ আসে, পড়ে ভাবি ব্যাটারা এই জিনিস করার সাহস পেল কোথায়?
এই ধরনের একটা কাজ হল পল আর গেতিয়ান ব্রিজের নতুন গ্রাফিক নভেল 'ইনফার্নো'। হ্যাঁ, যাঁরা জানেন ঠিকই আন্দাজ করেছেন, বাকি আমার মতো আগ্রহী অথচ অনভিজ্ঞ পাঠকদের উদ্দেশে বলে রাখি, ইনফার্নো আসলে ইতালিতান কবি দান্তে আলিঘেরির লেখা মহাকাব্যিক রচনা 'ডিভাইন কমেডি'-এর প্রথম অংশ। এই ন্যারেটিভ পোয়েট্রির তিনটে পার্ট Inferno, Purgatorio, Paradiso. গল্পও সহজ। রোমান কবি Virgil খোদ দান্তেকে নরকের মধ্যে দিয়ে তার প্রিয়তমার সঙ্গে সাক্ষাত করাতে নিয়ে চলছেন। ওপর ওপর থেকে বেশ একটা ফ্যান্টাসি অ্যাডভেঞ্চার মনে হয়, অদ্ভুত প্রাণী থেকে শুরু করে ম্যানেটিওর, আর প্লুটো সক্রেটিস অ্যারিস্টটল থেকে শুরু করে লুসিফায়ার সবাই আছেন, কিন্তু গোটা লেখাটাই অ্যালাগোরিকাল, প্রতীকী। সেইজন্য এই জিনিস ঘুরতে ফিরতে পড়া বা অ্যাডমায়ার করা বেশ কঠিনই বটে। কিন্তু এই জিনিস যখন কোনও শিল্পীর কাছে আসে গ্রাফিক নভেল হিসেবে অ্যাডাপ্ট করতে হবে বলে, তাহলে তাদের কী মনে হয়? ভূমিকাতে শিল্পীদ্বয়ী ঠিকই বলেছেন, "It takes nerves."
এইবার আসল কথা হল, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কাজ করে তারা ইনফার্নো নামে যে গ্রাফিক নভেল অ্যাডাপ্টেশন করেছেন, সেটার নাম ইনফার্নো হলেও এখানে গোটা যাত্রাটাই আছে। ১৬৭ পাতার বইয়ে এই মহাকাব্যিক রচনাকে কেটেছেঁটে ঢোকাতে গেলেও অবস্থা খারাপ হওয়ার কথা, তাছাড়া পাঠকদের কথা ভেবে কিছুটা ডাম্ব ডাউনও করতেই হবে, বোধগম্য না হলে ওই বই কিনে পড়বে কে? বলতেই হবে, তারা এই কাজে অনেকটাই সাফল্য পেয়েছেন। আর্টের দিক থেকে এপিক বলা চলে, বিশেষ করে যেখানে নরকের বিশালতা আর বিভীষিকা ধরা হয়েছে৷ স্কেচ স্টাইলে সাদা কালো শেডস নিয়ে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট হয়েছে, সম্ভবত গুস্তাভে ডোরের শৈলী অনুকরণ করে, তুলনায় চরিত্রদের কথোপকথনের স্কেচগুলো কয়েক জায়গায় একটু কম আকর্ষণীয়। গল্প অনেক সহজ হয়ে গেছে বলে পড়তে অসুবিধা হয় না।
মোদ্দা কথা, গ্রাফিক নভেলের দুনিয়ায় এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে৷ একের পর এক যুগান্তকারী কাজ হচ্ছে, থ্রি বডি প্রবলেম নিয়েও লোকজন ভীষণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে আছে। এই ঘরানা নিয়ে আগ্রহ থাকলে অতি অবশ্যই পড়ে দেখুন।
আব্রামস কমিকস আর্ট
1826/-
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন