Perhaps I am writing out of fear. Against forgetfulness. I write to remember, and to remind, so memories are not erased. Memory is my last lifeline.
এই বইটা নিয়ে পোস্ট দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না। পলিটিকাল রিয়ালিটি আর বাস্তব ঘটনা নিয়ে বই লেখা হলে পাঠকদের সন্দেহপ্রবণতা বাড়ে, আর এখন যা চলছে, তাতে এই বইয়ের লেখিকাকে অনেকেই প্রপোগান্ডিস্ট বলে উড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু আসল কথা হল, প্যালিস্তিনিয়ান লেখিকার এই বইটা এই বছর ইন্টারন্যাশনাল বুকার লংলিস্টে এসেছে ঠিকই, কিন্তু আসলে মূল আরবিতে বইটা লেখা হয়েছিল বারো বছর আগে।
কী নিয়ে এই বই? সংক্ষেপে বলতে, সে কথা নামেই বলা আছে। একদিন ভোরবেলা উঠে ইজরায়েলের মানুষজন দেখে প্যালেস্তাইনের সমস্ত মানুষ হাওয়া হয়ে গেছে। দুধের ডেলিভারি বয় থেকে বাসের ড্রাইভার, প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার থেকে জেলের আসামি, কারো কোনও পাত্তা নেই। সবাই যেন হাওয়ায় মিশে গেছে। এইবার ইজরায়েলের অথোরিটি নড়েচড়ে বসে। কী হল ব্যাপারটা? এটা কি হামাসের চক্রান্ত? না আরবরা স্ট্রাইক করেছে? ইজরায়েলের ডিফেন্স আর্মি তৎপর হয়ে অনুসন্ধান শুরু করল, ইন্টেলিজেন্স মাঠে নেমে পড়ল, কিন্তু কেউ কিছু বুঝতে পারছে না।
ওদিকে সাধারণ মানুষের মতামতও এক এক রকম। অনেকে আরব বন্ধুদের হারিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত, বাকিরা বলল, এ আসলে মোসাদের কাজ। একদম ঝেড়েঝুড়ে নিকেশ করেছে। আর না করে থাকলেই বা কি! ব্যাটারা বেমালুম উবে গেছে, বাঁচা গেছে। বেশ হয়েছে। এইবার শান্তিতে থাকা হবে। কিন্তু শান্তি হল না। পরবর্তী আটচল্লিশ ঘন্টা ধরে তোলপাড় চলল দেশ জুড়ে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রভাবিত হল, বিমান সেবা বন্ধ হয়ে গেল। দেখা গেল, এই প্যালেস্তিনিয়ানদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করলে যারা ভাবত সব সমস্যার সমাধান হবে, তা হচ্ছে না। এইটুকুই প্লটলাইন।
কিন্তু, কিন্তু, কিন্ত... এই স্পেকুলেটিভ প্লটলাইন দিলে বইটা সম্পর্কে কিছু বলা হয় না। আসলে ইবতিসাম মানুষজন হারিয়ে যাওয়া নিয়ে থ্রিলিং স্পেকুলেটিভ ফিকশন লিখতে আসেননি, তিনি এসেছেন একটা disappearance এর গল্প বলতে। এই disappearance, এই হারিয়ে যাওয়া আসলে সেই সমস্ত স্মৃতি ও মানুষের, যারা সত্তর বছর ধরে নিজেকের জমিতে সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন হয়ে বসবাস করেছে, কিন্তু অনেকের মতো জাফফা থেকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যায়নি। এই হারিয়ে যাওয়া একটা শহরের, সেই শহরের মানুষদের, তাদের অতীত জীবনের। একটা শহর বহাল তবিয়তে আছে, অথচ নেই। সেখানকার মানুষও কিছু কিছু আছেন সেখানে, কিন্তু নেই। লস অফ মেমোরি আর মেমোরি অফ লস, এটাই আসলে বইটার প্রধান উপাদান।
আলা বলে একজন হারিয়ে গিয়েছে, তার ফেলে যাওয়া ডায়েরি পড়ে ইজরায়েলের এক জিওনিস্ট লিবারেল ছেলে এরিয়েল বুঝতে চেষ্টা করছে সে তার দিদার জন্য কী অনুভব করত? কেমন ছিল তাদের পরিবার? তাদের কী নিয়ে আলোচনা হত? কীভাবে তার দিদার পুরোনো বাড়ি দখল হয়ে যায়, নতুন মানুষ চলে আসে, বিচ্ছিন্ন হয় অর্ধেক পরিবার। এরিয়েল খুব দরদ দিয়ে সেই ডায়েরি পড়তে শুরু করে, ডায়েরি পড়তে থাকে আলার ফেলে যাওয়া ঘরে বসেই। ক্রমে আমরা দেখতে পাই, এরিয়েল নিজেও এক প্যালেস্তিনিয়ান বন্ধুর বাড়িকে তার অনুপস্থিতিতে নিজের মতো করে বদলে দিচ্ছে, সেখানে কম্ফোর্টেবল হয়ে যাচ্ছে, কফি খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে, নোটস নিচ্ছে, আলা আর প্যালেস্তাইনের গল্প মানুষের সামনে তুলে ধরার অছিলায় অজান্তে সে নিজেও এই দখলদারির ইতিহাসে অংশ নিয়ে ফেলছে। এটাই আয়রনি।
গল্পে নানান চরিত্র এসেছে। বিচ্ছিনভাবেই এসেছে। মূল প্লট বলেই যখন কিছু নেই, তাহলে প্লটে তাদের ভূমিকার কথা জিজ্ঞেস করাও যুক্তিহীন। এই মানুষগুলো এসেছেন, কারণ তাদের নিয়েই এই বই। সকলের নিজের নিজের কাহিনি, নিজের নিজের সমস্যা, প্রেম বা অপ্রেম জীবন। কোনও একটা প্রধান ঘটনা নেই। কোনও টানটান প্লট নেই। কোনও সমাধান নেই। মানুষ আছে। তাদের বিষাদ আছে। অজানা প্রশ্ন আছে অনেক, সেগুলোর উত্তর নেই। শুরু আছে, শেষ নেই।
সত্যি বলতে, প্যালেস্তাইন সমস্যা নিয়ে খুব সংবেদনশীল না হলে বইটা হয়তো সকলের ভালো লাগবে না। প্লিজ্যান্ট রিড তো নয়ই। কিন্তু যদি মনের দিক থেকে এই সমস্যা আর এখানকার মানুষগুলোর মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে একাত্ম বোধ করেন, বইটা আপনার পড়ে ফেলাই ভালো।
The Book of Disappearance: A Novel
Syracuse University Press; Translation edition
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন