সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

টোকিও আজকাল

 


তাইয়ো মাতুস্মোতো যে জিনিসে হাত দেন, তাই সোনা হয়ে যায়। শুধু শুধুই ভদ্রলোক একাধিকবার আইসনার অ্যাওয়ার্ড পাননি। ভিজ থেকে তিন খণ্ডে প্রকাশিত 'টোকিও দিজ ডেজ' কথাটা ফের মনে করিয়ে দিল।
কাজুও সিওজাওয়া তিরিশ বছর ধরে মাংগা আঁকছেন। গ্রাফিক নভেলের শুরুতেই দেখা যায়, তিনি তার কর্মজীবন থেকে ইস্তফা নিচ্ছেন। স্বেচ্ছায়। তাঁর সহকর্মীরা, তাঁর জুনিয়াররা, সম্পাদক হিসেবে যাঁদের তিনি হাত ধরে সামনে নিয়ে এসেছেন, সবাই খানিকটা বিভ্রান্ত। সত্যি বলতে, সিওজাওয়া নিজেও খানিকটা কনফিউজড। তাঁর মাংগা জীবনের দীর্ঘ কেরিয়ার যেন গিয়েও আর যাচ্ছে না। তিনি জমিয়ে রাখা ঘরভর্তি মাংগা কমিকস বিক্রি করব করব করেও করতে পারছেন না, আঁকা ছেড়ে দেব বলেও ছাড়তে পারছেন না, অজান্তেই সেই কাফে বা টি হাউসের দিকে পা ঘুরে যাচ্ছে যেখানে তাঁর জুনিয়ার বা মেন্টাররা বসতেন, এখনও বসেন। বইয়ের দোকানে দোকানে ঘুরছেন। শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলছেন, আর্ট ফর্ম নিয়ে আলোচনা করছেন। মাঝে মাঝে হয়তো একজনকে বোঝাচ্ছেন, যে আগের মতো আর কাজে সেই স্পার্ক দেখা যাচ্ছে না। আবার কাউকে বলছেন, লেগে থাকো, তোমার মধ্যে আছে, শুধু হাল ছেড়ো না। এক সময় গল্প সিওজাওয়াকে ছাড়িয়ে বৃহত্তর মাংগা জগতে ঢুকে পড়ে। কত কত শিল্পী। কেউ প্যাশনেট, কেউ হাল ছেড়ে দিয়েছে, কেউ লড়ে যাচ্ছে, কেউ অবসাদগ্রস্ত। তাদের রোজনামচা, তাদের আশা হতাশা আর... আর টোকিও শহর। ভালোয় মন্দে, রোদে বৃষ্টিতে, কাকাতুয়া আর বেড়ালের কথায়, ছাতা উড়ে যাওয়ায়, শেষ ট্রেন ধরায়, রাস্তা ক্রস করায়... শহর চলছে গল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। সাদামাঠা। অলংকারহীন। আড়ম্বরহীন। কিন্তু জীবনের মতো বহমান। তিন খণ্ড ধরে শুধু এ-ই। শহর আজকাল। টোকিও দিজ ডেজ।
এসব গল্প লেখা থুড়ি আঁকা সকলের কম্মো নয়, সাহসের কথা তো ছেড়েই দিলাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন