রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৬

....অথচ প্রজাপতি হতে পারতাম।বদলে যেতে পারতাম ভৈরবী মুহুর্তে ফুটে ওঠা অন্য কোনো ফুলে,ভোমরা অথবা মৌমাছি হওয়াতেও কোনো বাধা ছিল না।কিন্তু কিছুই হওয়া হলো না,তাই শেষমেষ মানুষই হলাম।অবাক হয়ে তাকিয়ে প্রথমে নিজেকে,তারপর তাকে দেখলাম চোখের কোন দিয়ে,গায়ের রং নীল,ঠিক আমারই মতো,শুভ্রটানে সুসজ্জিত দেহের সুবাসে আমার পুরনো জীবনের স্মৃতি।সময় আসবে।পুনরাবৃত্তি হোক একই ঘটনার।অপেক্ষা করতে হবে ১২ বছর.....মানবজীবন রইলো,কিন্তু গাছ আর ফুলের মায়া আমাকে আঁকড়ে ধরে রাখল।শুয়ে রইলাম পাতাঝরা গাছের নিচে,বাগান যখন ঘুমিয়ে রইল,তখন ঘুমের সুতোয় টান দেওয়ার অভ্যেস টা একই রয়ে গেল।স্বপ্নে দেখলাম হাতে পায়ে পল্লবিত পুষ্পের কলি,শিরাগুলো আঙ্গুল দিয়ে বেরিয়ে মাটিতে গিয়ে মিলিত হয়েছে।ঘুম হয়না।রাতবিরেতে ওঠে জানলা খুলে গাছ পাতাদের ফিসফিসানি অনুভব করি।চায়ের পটে ফেলে দেওয়া গোলাপের পাঁপড়ি আর আয়নার চারিপাশে বাঁধিয়ে রাখা লতাপাতার নকশা ডাক দিয়ে যায়।সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকি আকুল দৃষ্টিতে।বৃষ্টি এলো।ভিজলাম।সেও ভিজছে নিশ্চয়ই,কিন্তু তাকে থাকতে হবে দৃষ্টির অন্তরালে।বড় কষ্ট,বড় সুদীর্ঘ এই প্রতীক্ষা।বছর কাটতে লাগল.....
আজ এসেছে সেই দিন।অবশেষে।রাতের তৃতীয় প্রহর।আমার চোখে ভিজে থাকা কৌতুহল,আর বেদনার সারি।অপেক্ষা শেষ হয়েছে,কিন্তু আকাঙ্ক্ষা কি এখনো একই আছে?সময়ের কাঁটায় জীবনের শাখাপ্রশাখা প্রসারিত হয় অজানার দিকে|ধীরে ধীরে সেই অপরিচিত কুলই হয়ে ওঠে আপন।কিন্তু মায়ার বন্ধন নিয়তিকে বাঁধতে পারে না।বাগানে এসে দাঁড়িয়েছি।আস্তে-আস্তে সে আবির্ভূত হলো,প্রথমে হাত পা প্রসারিত করে সহজ করলো নিজেকে,তারপর করুণ দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে ভোররাতের প্রথম অপরাজিতা,শেষ করে ১২ বছরের দীর্ঘমেয়াদী নির্বাসন।বিদায়  ...ডান হাত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে এক ঝটকায় আমি তার ডাঁটি ধরে মারলাম টান,প্রাণপণে। 
.....চোখ খুললাম।আমি ফিরে এসেছি।গায়ের নীলের ওপর সাদাটান গুলো একই ভাবে উজ্জ্বল।ওপরের দিকে চোখ তুললাম।সে তাকিয়ে রয়েছে আমার দিকে।চোখ বেয়ে নেমেছে জলের রেখা।আর কোনদিন তুমি ফুল ছিঁড়বে না।আমরা আজ থেকে বন্ধু হলাম.....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন