শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৬

রেডিওটা হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেল।থেমে গেল গান।নবগুলো ঘুরিয়ে,ব্যাটারি পাল্টে,ঝাঁকুনি দিয়েও কোনরকম হরকত করানো গেল না আটত্রিশ বছর বয়সী এই তুখোড় যন্ত্রকে দিয়ে।কিন্তু সাধারণ এই বিকলতা মেনে নেওয়া অতটা সোজা হলো না রেডিওর মালিকের জন্যে।সে ইজিচেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ল।একে একে বেরোল স্ক্রুড্রাইভার,হাতুড়ি,তারের কৌটো।চলতে লাগলো ঠুকঠাক,যদি অসময়ের ঘুম ভাঙ্গে তিরিশ বছরের পুরনো সঙ্গীর।নাকের ওপর চশমাটা সোজা করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই চলল।সামনে জ্বালানো মোমবাতিতে ধরা পড়ল তার শুকনো চোখের ওপর পাকা চুলের ছায়া।রিসিভার ডায়ালে স্টেশন ঘোরাতে ঘোরাতে দৃশ্যেপট সরে যেতে লাগলো স্টেশন এরই মত।শব্দরেখায় হেলান দিয়ে দাঁড়ালো বছর বারোর দুটি ছেলে হাতে একটা অন্য রেডিও নিয়ে,সামনে দিয়ে চলে গেল সাইকেলে ঘুরতে থাকা রেডিওর ঘোষনা।দুটো স্পিকারে ভেসে উঠলো সদ্যবিবাহিত দম্পতির ছবি,সে ছবি পাল্টে গেল।কিশোর ছেলেদের দল পা ঝুলিয়ে বসলো ওপরের হ্যান্ডেলে।সম্মোহনী ঘড়ির কাঁটায় যৌবনের এর ছবি বার্ধক্যে পরিণত হলো,কিন্তু তাদের কোলের ওপরের রেডিও একই রয়ে গেল।আজও এক,কিন্তু এবার সে ছুটি চায়।কথা বলতে আর ইচ্ছা করে না,পুরনো সঙ্গীর কাছ থেকে সে বিদায় নেবে।কিন্তু যা প্রত্যাশিত,তার প্রত্যাশা কি কেউ করে?ঠুকঠাক,ঠং ঠং হয়েই চলল।

একসময় আলো জ্বলে উঠলো।বেজে উঠলো গান।কিন্তু ইজিচেয়ার শুন্য রয়ে গেল চিরকালের মত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন