জিম উডারিং এর 'ফ্র্যাঙ্ক' সিরিজের একটা সম্পূর্ণ গ্রাফিক নভেল। নো সংলাপ, কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার চলছে প্রথম পাতা থেকেই।
যাঁরা পড়েননি আগে, উডারিং এর কাজের ধরনকে বলা হয় Mythopoeic. ফ্র্যাঙ্ক বলে যে 'বেড়াল' জাতীয় চরিত্রকে কেন্দ্র করে এর আগে ওয়েদারক্রাফট বলে আরেকটি নভেল লিখেছেন, তার সঙ্গে এই বইটার মিল আছে। মানে, শৈলীতে। ইম্প্রেসিভ রেন্ডিশন, সূক্ষ্মতম ডিটেল অব্দি এঁকে ফেলেন উডারিং, কিন্তু এমন বোল্ড স্ট্রোকে আঁকেন যে একটা হিপনোটিক অনুভূতি হয়। উল্টোপাল্টা সব প্রাণী, বেলুনে উড়ে বেড়ানো অপদেবতা, ফ্র্যাঙ্কের ঘর উড়িয়ে দেওয়া ক্যাপিটালিস্টিক সিস্টেম, অর্গ্যান ফ্যাক্টরি... প্রথম পাতা থেকে ছুটোছুটি চলছে। ফ্র্যাঙ্ক মাঝেমধ্যে মনে হয় হ্যালুশিনেট করছে, ওদিকে এ কথাও সর্বজনবিদিত যে জিম উডারিং নিজেই ছোটবেলায় বহুদিন ধরে হ্যালুশিনেশন দেখতে পেতেন, তাঁর একটা সিরিয়াস ট্রমা ছিল; অদ্ভুত সব প্রাণী তাঁর চোখের সামনে ঘুরে বেড়াত। আসলে এই বইয়ে ফ্র্যাঙ্ক বলে যে চরিত্রটি ঘর হারিয়ে নতুন জীবনের খোঁজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে আর একসময় ভালোবাসা খুঁজে পেয়ে স্বস্তি পাচ্ছে, সেটা খোদ শিল্পীর নিজের জীবনের গল্প। তাই মন দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, এই গল্পের প্রায় সবটাই প্রতীকী, প্রতিটা ছবিই সংলাপহীন হয়েও বহুঅর্থবহনকারী।
এমনিতেই উডারিং এর আঁকার হাত অনন্য। বইয়ের প্রতিটা স্কেচই অসম্ভব সাহসী, জটিল, সূক্ষ্ম এবং অনেকটা সাইকেডেলিক ধাঁধাঁর মতো। প্যানেলগুলো যেন নিজের মধ্যে একটি জীবন্ত স্বপ্নজগৎ নিয়ে রয়েছে, যেখানে বাস্তবতা ও কল্পনা মিলে এক অদ্ভুত রূপ নেয়। সত্যি বলতে ছবিগুলো মন দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, কী কঠিন এই সমস্ত ছবি কাগজে তুলে আনা!
যদি Mythopoeic স্টাইল নিয়ে আগ্রহ থাকে, একশো পাতার এই বইটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে নেওয়াই ভালো।
ফ্যান্টাগ্রাফিক্স
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন