শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬

১)আতরের দোকান করে যারা,তাদের দোকানের বাইরের পৃথিবীটা বড়ই বাসী মনে হয়।পুষ্পের সৌরভ পেলেও তা যেন মনে হয় জোলো, ভালো মিষ্টির সুবাস মনে ধরে না।সব কিছুই বড় অপরিশোধিত।আতরের দোকানটা যেন আরেক জগত,গন্ধের হাট বসেছে সেখানে।কোনোটা পারস্যের ফুলের আতর,কোনটা হিমালয়ের আয়ুর্বেদিক শিকড়এর গন্ধ।প্রতিটি ফুল নিজের ইতিহাস জানায়।বলতে চায় নিজের গল্প।কয়েকজন কারিগর বছরের পর বছরের ধরে এক্সপেরিমেন্ট করে নতুন সুগন্ধের আশায়।দক্ষ হাতে গন্ধ তৈরী করে ওস্তাদ তারা।কিন্তু যে গন্ধ তৈরী করা যায় না,সেই গন্ধ পেলে তারা হীনমন্যতায় ভোগে।মাথার চুল খামচে ধরে চেষ্টা চালিয়ে যায় কিন্তু  ... পারে না। 

২)পুরনো দেরাজের ভিতর একরকম গন্ধ থাকে।গন্ধটা খুব পরিচিত কিন্তু ঠাহর করা যায় না।কখনো মনে হয় গন্ধটা প্রাচীন আসবাবের,কখনো মনে হয় নতুন বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ।বেশ কয়েক বছর পর যখন দেরাজ খোলে,গন্ধটা ছড়িয়ে থাকে বইয়ে,ছোটবেলার ডায়রিতে,জমানো স্টিকারএর কৌটোয়,রঙিন পেনসিলে.একটুক্ষণ বসে থাকলে আস্তে আস্তে অন্যান্য প্রতিযোগিরাও ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেকে চেনানোর জন্য.লক্ষী পুজোর গন্ধ,সন্ধ্যেবেলায় হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসার গন্ধ,মাদুরে বসে খেতে বসার সময় হারিকেনের সলতের গন্ধ,মরাঘাসের ওপর ভিজে ফুলের অপেক্ষার গন্ধ,আরো কত....রঙের ও নিজস্ব এক একটা গন্ধ থাকে,যেমন থাকে ইতিহাসের.স্মৃতির গন্ধ অবশ্য লুকিয়ে থাকে নুড়ি নুড়ি গল্পের পিছনে,আড়াল দিয়ে হাসে.কিন্তু বর্তমানের কোনো গন্ধ থাকে না,কেননা বর্তমানের কোনো গল্প থাকে না।গল্প বুনে ওঠে অতীতের তারে।তাই গল্পের গন্ধ তৈরী করা যায় না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন