রবিবার, ২৯ মে, ২০২২
জন্নত
বুধবার, ২৫ মে, ২০২২
গুবলুদা ও কুইজ কম্পিটিশন
গুবলুদা ও কুইজ কম্পিটিশন
প্লুটো দু’ হাতে ঘাস ছিঁড়তে ছিঁড়তে বলল, “না, এইবার একটা হেস্তনেস্ত করা দরকার।”
আমি অরুণবাবুর
বাগান থেকে কয়েকটা ডাঁশা পেয়ারা নিয়ে এসেছি। সেইগুলোতে বিটনুন মাখিয়ে খাওয়া
চলছে।
আমি ইউরেনাসকে
একটা টুকরো দিয়ে কিন্তু কিন্তু করে বললাম, “বলছিস?”
প্লুটোর কথা শুনে
মঙ্গলও সাহস পেয়ে গেছে। একটা পেয়ারার আস্ত টুকরো মুখে পুরে নিয়ে সে বলল, “হ্যাঁ। লবিগাকে খিক্ষা গিতেই অবে।”
শুক্র আর বুধ যমজ
বোন। বুধ তালু থেকে বিটনুন চাটতে চাটতে বলল, “বাবা মা কে বলে দিলে হয় না?”
শুক্র মাটিতে বসে
বিনুনির চুলে আঙুল চালাচ্ছিল। সে এইবার কাঁদো কাঁদো মুখে বলল, “কিন্তু রবিদা তো বয়সে বড়। নালিশ করলে যদি স্কুলে তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এসে
মারধোর করে?”
আমি (ইয়ে মানে
আমার নাম শনি) একটা ইঁটের টুকরোকে লাথি দিয়ে নালিতে পাঠিয়ে দিয়ে বললাম, “আর বলবিই বা কী? রবিদা আমাদের কুইজে চ্যালেঞ্জ
করেছে? কেউ পাত্তাই দেবে না। সবাই উল্টে ওরই পক্ষ নেবে!
রবিদা আমাদের কুইজের জন্য পড়াশুনা করতে বলছে, এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে?”
নেপচুন জিন্সের
প্যান্টে হাত ঢুকিয়ে বলল, “সেই। জানিসই তো, ওই কুইজ কম্পিটিশনে প্রাইজ পেয়ে পাড়ায় ওর কেমন রোযাব বেড়েছে!”
বৃহস্পতি আমাদের
মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান, ফেলুদা আর দীপকাকু গুলে
খেয়েছে। সে মাথা নেড়ে বলল, "ওরকম করে হবে না।
রবিদার বড্ড অহংকার হয়েছে। ওকে জব্দ করতে হলে ওকে ওর জায়গাতেই হারাতে হবে।"
“কিন্তু কী করে? হোমটাস্ক বাদ দিয়ে শেষে কুইজের বই মুখস্থ করতে হবে?” শুক্র প্রায় কেঁদে ফেলে আর কি! ও বেচারি এমনিতেই একটু
ভুলোমনা, কবিতা আর অঙ্কের ফর্মূলা মুখস্থ করতেই ওর হাল খারাপ
হয়ে যায়। আর এ তো একেবারে অজানা জগত!
অগত্যা আমরা সবাই
মাঠের উপর থেবড়ে বসে চিন্তা করতে শুরু করলাম। কূলের আচার খেয়ে পেট খারাপ হয়েছে বলে
পৃথিবী আজ খেলতে আসেনি, তাই আমরা আটজনই মগজ খাটাতে
শুরু করলাম।
গুলিয়ে যাচ্ছে তো? তাহলে খুলেই বলি। আমরা মানে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি মানে আমি, ইউরেনাস, নেপচুন আর প্লুটো হলাম মিল্কিওয়েভ ইংলিশ স্কুলের ছাত্র। নাম শুনে অবাক হওয়ার
কিছু নেই। এগুলো থোড়াই না আমাদের আসল নাম। আমার আসল নাম হল দীপ্তমান সেনগুপ্ত। বুধ
আর শুক্র হল অনিন্দিতা আর শ্রাবণী। অন্যদেরও একটা করে ভালো নাম আছে।
আমরা সবাই ক্লাস
ফাইভে পড়ি। বাড়িও একই আবাসনে। আমাদের এই বিচিত্র নামকরণ করেছে রবিদা ওরফে রবিকান্ত
দাস।
আমাদের চেয়ে দু' ক্লাস উঁচুতে পড়লেও হাইটে সে আমাদের চেয়েও কম, কিন্তু তার ত্যান্ডাই মাণ্ডাই দেখলে ভড়কে যেতে হয়। আমাদের উপর রবিদা বরাবরই
হুকুম চালায়, কথায় কথায় খিল্লি করে প্রত্যেককে। এমন ডেঁপো আর
নাকউঁচু ছেলে আমি আর কোথাও দেখিনি। কিন্তু তাও রবিদার সব 'বুলি' আমাদের মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। কারণ একটাই, রবিদা পড়াশুনায় বেশ ভালো। আমাদের স্কুলে বদলি নেওয়ার পর দু’ বছর ধরে ফার্স্ট হচ্ছে ক্লাসে, সাইন্স, অঙ্কে আর ইংরেজির শিক্ষকরা বেশ
সমীহ করে
রবিদাকে। ক্রমে স্কুলের বাইরেও তার সুনাম ছড়িয়েছে। আমার মা তো সুযোগ পেলেই বলেন, “রবির কাছ থেকে কিছু শিখতে পারিস না?” কমবেশি একই মনোভাব অন্যদের বাড়িতেও।
রবিদা পড়াশুনায়
ভালো হয়ে আমাদের উপর শাসন করার অধিকার পেয়ে গেছে, তাও আমাদের বাড়ির লোকের আশকারায়। ভগবানও এমন নিষ্ঠুর, নাহলে রবিদার বাবা একই আবাসনে ফ্ল্যাট কিনে আসবেন কেন? যবে থেকে সে এখানে এসেছে, আমাদের শান্তির দিন বিদায় নিয়েছে।
স্কুলে জ্ঞান আর খেলায় জোচ্চুরি করা তো আছেই, তারপর মাঝেমধ্যেই সে মোটা মোটা আঙুল দিয়ে আমাদের
মাথায় গাঁট্টামারে, বুধ আর শুক্রর বিনুনি টেনে হাসতে থাকে। তার দৃঢ়
ধারণা, তার মতো বুদ্ধিমান আর কেউ নেই। তাই আমাদের মতো
বোকাদের শিক্ষা দেওয়ার গুরুদায়িত্ব সে না বলতেই কাঁধে তুলে নিয়েছে। এই আজ ইতিহাসের
সাল তারিখ জিজ্ঞেস করে বিরক্ত করছে, পরদিন
বিজ্ঞানের প্রশ্ন
করছে। কোথা থেকে ভুলভাল সব হেঁয়ালি শিখে আসে, সেই সব পরীক্ষা করে আমাদের উপর। না বলতে পারলেই বত্রিশপাটি দাঁত বের করে গা
জ্বালানো হাসি হাসে আর আমাদের বক দেখিয়ে বলে, "ইউ অল আর টিউবলাইটস। তবে দপ দপ করেই যাস, জ্বলতে পারিস না। হিহিহি..."
তার অত্যাচার
আমাদের এক প্রকার সয়ে এসেছিল, কিন্তু কপালে যে আরো দুঃখ
ছিল তা কে জানত?
হল এই যে
দুর্গাপুজোর সময় আমাদের আবাসনে বড়রা ছোটদের জন্য একটা মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কিত
কুইজ কম্পিটিশনের আয়োজন করল। যে জিতবে, তাকে বিড়লা তারামণ্ডলে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়াও দেওয়া হবে আরো কিছু
আকর্ষণীয় পুরস্কার। আমি নাম দিইনি। কিন্তু রবিদা নাম দিল এবং প্রথম স্থান
অধিকার করল। খুবই
সোজা সোজা প্রশ্ন ছিল, তিন চারটে বাদে আমিও সব বলে
দিতে পারতাম। কিন্তু ফার্স্ট হয়ে রবিদার সে কী গুমোর! ক্লাব সেক্রেটারির হাত থেকে 'গ্র্যাভিটি' সিনেমার সিডি আর কাপ নেওয়ার সময় সে একবারে বিরাট
কোহলির মতো হাত তুলে অঙ্গভঙ্গি করতে লাগল। রবিদার এই পুরস্কার যে আমাদের বিপদ ডেকে
আনবে সে যদি তখন জানতাম?
এক সপ্তাহ পর
তারামণ্ডল থেকে ঘুরে আসার পর দেখি রবিদাকে মহাকাশের ভূতে পেয়েছে। 'গ্র্যাভিটি' দেখে সে নাকি অ্যাস্ট্রনট হবে বলে ঠিক করেছে। পরদিন
মাঠে এসেই সে বলল, “সবাই শোন। আজ থেকে তোদের নাম দিলাম সোলার সিস্টেমের
গ্রহের উপর। বিজু, তুই হলি প্লুটো।“
বিজু মাথা নেড়ে বলল, “আমি প্লুটো হব কেন? নাম যদি দিতেই হয়, আমি মার্স হব।”
রবিদা খেঁকিয়ে
উঠে বলল, “চোপ। প্লুটো যেমন ডোয়ার্ফ প্ল্যানেট, তুইও অমন বেঁটে বামনের মতো দেখতে। মঙ্গল হবে কিশোর।”
কিশোরের মুখে
একটা লালিমা আছে, তার ঠোঁট দু’টোও লাল। তাকে মঙ্গল করার যুক্তি বুঝতে
আমাদের অসুবিধা হল না। আমি বেশ মজা পেয়ে হাসতে যাচ্ছি, এমন সময় রবিদা বলল, “তুই হাসছিল কেন বোকচন্দর? তুই হলি গিয়ে শনি।”
আমি শনি হলাম কেন? হাঁ করে তাকাতেই দেখি রবিদা আমার প্যান্টের দিকে চেয়ে হাসছে। ব্যাপারটা বুঝতে
পেরে আমার গা কিরকির করে উঠল। আমি অত্যধিক রোগা বলে আমার প্যান্টটা মাঝে মাঝে একটু
নেমে যায়, আমার কোমরের কালো ঘুনসিটা তখন চোখে পড়ে। সেই কবে
ঠাকুমা পরিয়ে দিয়েছিল ওই সুতো, সেটাকে রবিদা স্যাটার্নের
রিংয়ের সঙ্গে তুলনা করেছে। কী বদমাশ রে বাবা!
পরদিন থেকেই
আমাদের খেলাধুলা মাথায় উঠল। রবিদা সর্বক্ষণ মহাকাশের জ্ঞান কপচাচ্ছে, ইচ্ছে না হলেও আমাদের শুনে হুঁ হাঁ করে যেতে হবে। সেরেস আর এরিস বলে দু'টো বামন গ্রহ পাওয়া গিয়েছে বা নেপচুনের পর যে কাইপার বেল্ট বলে একটা গ্যাসীয়
আচ্ছাদন আছে, সে সব মুখস্ত করে আমাদের শোনানোর কী আছে বাপু? তার বাতেলা আর গুল মারার বহরও দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু যতই ভুলভাল বকুক, আমরা আপত্তি করলেই গাঁট্টা খেতে হবে। রবিদা নাকি তারামণ্ডলে গিয়ে ব্ল্যাকহোলের
ভিতর ঢুকেছে, তার মামা মুম্বাই থেকে আসল স্পেসস্যুট পাঠিয়েছে, বড় হয়ে চাঁদে যাওয়ার জন্য নাসার খাতায় সে নাম লিখিয়েছে... আমরা শুনি আর মাথা
চুলকাই।
ক্রিকেট ম্যাচ
খেলার সময় হয় সবচেয়ে মুশকিল। রবিদা ক্যাপ্টেন বলে ফিল্ডিং সাজায়, প্লুটোকে পাঠিয়ে দেয় মাঠের কিনারায়। বিজু বেশি লম্বা নয়, বাউন্ডারিতে লম্বা লোকদের দাঁড় করানোই নিয়ম। কিন্তু টিমে সবচেয়ে লম্বা যে
পৃথিবী, সে তখন আম্পায়ার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রবিদার মত হল, পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই সৌর মণ্ডলের গ্রহদের কাজকর্ম, তাকে থাকতে হবে মাঝখানে। স্লিপে তখন বুধ আর শুক্র, মানে অনিন্দিতা আর শ্রাবণী দাঁড়িয়ে। ওরা নতুন খেলছে বলে অতটা চটপটে নয়, ফলে স্লিপের ক্যাচ আকছার মিস হয়। তখন রবিদা চেঁচিয়ে বলে, “অক্সিজেন সিলিন্ডার শেষ হয়ে গেছে নাকি? ক্যাচগুলো কি তোদের ক্যাপ্টেন মার্ভেল এসে ধরবে?”
রবিদা নিজে মোটেও
ভালো খেলতে পারে না, বল করলেই ব্যাটসম্যান চার বা ছয় হাঁকিয়ে দেয়। তখন সে
হনুমানের মতো লাফাতে লাফাতে বলতে থাকে, “ওরে মঙ্গল, ওরে শনি! হ্যালির ধুমকেতুর মতো ছুটে যা!”
এই সব কান্ড দেখে
আমাদের তো মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। রবিদার স্ক্রু ঢিলে হয়ে গেছে সন্দেহ নেই। তা
বাপু তুমি মহাকাশচারী হবে ভালো কথা, আমাদের ওতে জড়ানো কেন? বাড়িতে বলেও কিছু লাভ হয়নি।
এসব না হয় চলে
যাচ্ছিল কিন্তু কালকের ঘটনা আর বরদাস্ত করা গেল না। আমরা অ্যাভেঞ্জার্স দেখে মনের
সুখে আড্ডা দিচ্ছি, এমন সময় রবিদা এসে ঘোষণা করল, “ওসব থানোস ফানোস ডাহা মিথ্যা। এলিয়েন বলে কিছুই হয় না। ভিন্নগ্রহীদের নিয়ে
লেখা সব গল্প আর সিনেমা কল্পনা।”
আমি তেড়েমেরে
কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, তার আগেই ইউরেনাস ওরফে ঋষি
লাফিয়ে উঠে বলল, “তুমি বলছ প্রোফেসর শঙ্কু ডায়েরিতে মিথ্যে লিখেছেন? ওর সঙ্গে অন্য গ্রহের প্রাণীদের দেখা হয়নি?”
ঋষি প্রোফেসর
শঙ্কুর একনিষ্ঠ ভক্ত, রবিদার কথায় তার চটে ওঠা
স্বাভাবিক। রবিদা ঠোঁট উল্টে বলল, “হয়নি!হয়নিই তো!”
আর যায় কোথায়, ঋষি সব কিছু ভুলে এক ধাক্কায় বেঁটে রবিদাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে বলল, “তুমি কাঁচকলা জানো। তোমার বাবা পুজো কমিটিতে আছে
বলে তোমাকে জোর
করে প্রাইজ পাইয়ে দিয়েছে।”
এই কথা শুনে
রবিদার মুখ লাল হয়ে গেল। সে উঠে দাঁড়িয়ে গায়ের ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে বলল, “তোরা সবাই এক একটা গাধা। অতই যদি জানিস পরের
বার কুইজে জিতে
দেখা! আমার ক্লাসের ছেলেমেয়েরা এক টিমে, তোরা এক টিমে। হিম্মত আছে? দেখি তোদের প্রোফেসর শঙ্কু
আর অ্যাভেঞ্জার্সদের কত মুরোদ?”
আমাদের
উল্টোপাল্টা বললে বিশেষ গায়ে মাখতাম না। কিন্তু তাই বলে অ্যাভেঞ্জার্সদের পিছনে
লাগা! প্রিয় হিরোদের অপমানিত হতে দেখে আমাদের গা জ্বালা করে উঠল। আমরা মুঠো পাকিয়ে
চেঁচিয়ে বললাম, “হোক তবে! হয়ে যাক। হোক কলরব!”
রবিদা ফুঁসতে
ফুঁসতে চলে গেল। যাওয়ার আগে বলে গেল, “আর কয়েক মাস। তারপর তোদের
হচ্ছে।”
তারপর থেকেই
আমাদের মিটিং বসেছে। রবিদা গাদাগাদা বই মুখস্ত করেছে স্পেস নিয়ে, ওকে হারানো সহজ নয়। ভেবেচিন্তে কিছুই ঠিক হল না। ঋষি বলল, “আজ সবাই ভাব। কাল শনিবার। বিকেলে মাঠে জড় হয়ে আলোচনা করব।”
পরদিন গিয়ে দেখি
পৃথিবী ওরফে কেল্টু এসে গিয়েছে। ঋষি আমাদের দেখে হাসতে হাসতে বলল, 'মুশকিল আসান। খোদ প্রোফেসর শঙ্কু আমাদের সাহায্য করবেন।"
আমি তো ভ্যাবলার
মতো তাকিয়ে আছি। কেল্টু আমার কাঁধে হাত রেখে বলল, “আরে আমার মামা কালই ভুবনেশ্বর থেকে ফিরেছে। ওর নাম শঙ্কু বন্দোপাধ্যায়। ইসরো
মনে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনে কাজ করেন। মাস কয়েক ওয়ার্ক ফ্রম হোম
করবেন। কাল জয়(বৃহস্পতি) ফোন করে সব বলেছে। আমি সে কথা মামাকে বলতে উনি বললেন
আমাদের সাহায্য করবেন। আজই যেতে বলেছেন।”
কেল্টুর কথা শুনে
তো আমি তাকে জড়িয়ে ধরলাম। তারপর মহানন্দে নাচতে নাচতে প্ল্যানেটস অফ এপস থুড়ি
প্ল্যানেটস অফ মিল্কিওয়েভ চলল প্রোফেসর শঙ্কুর
কাছে। কেল্টুর
বাড়িতে আমাদের জন্য অপেক্ষা করে ছিলেন তিনি। কী আশ্চর্য! তাকে সত্যিই প্রোফেসর
শঙ্কুর মতো দেখতে! সেই রোগা, মাঝারি হাইট। সামনে চুল
উঠে টাক পড়ে গেছে, কাঁচাপাকা দাড়ি। চোখে চশমা, মুখে হাসি। আমাদের দেখে
তিনি হেসে বললেন, “এসে গেছিস তোরা! আমাকে আবার প্রোফেসর শঙ্কু বলে
ডাকিস না যেন! বরং গুবলুদা বলতে পারিস। শরবত খাবি তো?”
কিছুক্ষণের
মধ্যেই শরবত চলে এল। কমলালেবুর ফ্লেভার হলেও বেশ অন্যরকম স্বাদ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “এটা কীসের শরবত রে কেল্টু?”
উত্তরটা অবশ্য
দিলেন গুবলুদা। হেসে বললেন, “এ হল ট্যাং। আমেরিকাতে
তৈরি। নাসার মহাকাশচারীরা কিন্তু পৃথিবীর বাইরে গেলে এই শরবতই নিয়ে যায়। গতবার
হিউস্টনে গিয়ে
নিয়ে একগাদা প্যাকেট নিয়ে এসেছি।”
আমরা তো সে কথা
শুনেই ‘ফ্ল্যাট’। আমরা মহাকাশযাত্রীদের শরবত খাচ্ছি! ভাবাই যায় না।
গুবলুদা বললেন, “কেল্টু আমাকে সব বলেছে। তোদের ওই রবিদা যে সব কুইজের বই মুখস্ত করে অত দেমাক
দেখাচ্ছে, তাতে আসলে কিছুই জানা যায় না। স্পেস
ইজ সো বিগ। সেখানে
এমন সব ঘটনা হয় যা আমাদের কল্পনারও ঊর্ধ্বে। মহাকাশ সম্পর্কে সত্যিই জানতে চাইলে
তাকে ভালোবাসতে হয়, তার সঙ্গে সময় কাটাতে হয়।
তবেই তার কথা
বোঝা যায়। তোরা যদি চাস, আমি তোদের হেল্প করতে পারি।
কিন্তু এগোনোর রাস্তা তোদের নিজেদেরই খুঁজে নিতে হবে।”
ঋষি উশখুশ করছিল।
সে এইবার কিন্তু কিন্তু করে বলল, “গুবলুদা। আগে একটা কথা বল
তো, এলিয়েন বলে কিছু হয় না? রবিদা কি ঠিক বলছিল? প্রোফেসর শঙ্কু
ডায়েরিতে মিথ্যে
কথা লিখেছেন?”
গুবলুদা হাসতে
হাসতে বললেন, “তোদের রবিদা কিচ্ছু জানে না। শোন, আমাদের পৃথিবীতে যত বালিকণা আছে, মহাকাশে তার চেয়ে হাজার গুণ
বেশি নক্ষত্র আছে।
তার একাংশ
সম্পর্কে জানতেই আমাদের আরো দশ হাজার বছর লেগে যাবে। সেখানে কোথায় কী আছে কে বলতে
পারে? যুক্তি তো বলে, এই অনন্ত মহাকাশে অন্য প্রাণীদের থাকার সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। তবে কিনা...”
“কী?” দম বন্ধ করে জিজ্ঞেস করল ঋষি।
“মঙ্গল গ্রহে
বৈজ্ঞানিকরা ইতিমধ্যেই প্রাণের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন। ভূমিগত হ্রদের নীচে পাওয়া
সূক্ষ্ম মাইক্রোঅরগ্যাজমিক জীবগুলো ইটি বা জাদুর মতো তাদের দেখতে নয় ঠিকই, তবে এলিয়েন তো বটেই। আমাদের গ্রহের পাশের গ্রহেই যখন প্রাণের সন্ধান পাওয়া
যাচ্ছে, তাহলে অন্য গ্রহ আর গ্যালাক্সিতে কী কী আছে কে বলতে
পারে?”
আর যায় কোথায়, ঋষি তুড়ি মেরে লাফিয়ে উঠে বলল, “আমি বলেছিলাম। প্রোফেসর
শঙ্কু কোনওদিন ভুল বলেন না।”
গুবলুদা হেসে বলল, “চল। তোদের বরং একটা জিনিস দেখাই।”
বাইরে অন্ধকার
হয়ে গিয়েছে। শাঁখ বাজানোর শব্দ কানে আসছে। আমরা গুবলুদার পিছন পিছন ছাদে উঠে এলাম।
সেখানে দেখি একটা মাঝারি আকারের টেলিস্কোপ ফিট করা হয়েছে। সেটার দিকে ইশারা করে
গুবলুদা বলল, “আজ থেকে তিন দিন পর সুপারমুন হওয়ার কথা। পৃথিবীর
খুব কাছ দিয়ে পরিক্রমা করবে চাঁদ। কে কে দেখতে চাস?”
আমরা হইহই করে
উঠলাম। এ সুযোগ ছাড়া যায় না। গুবলুদা হেসে বলল, “হবে হবে। তোদের সবাইকেই টেলিস্কোপ ব্যবহার করতেও শিখিয়ে দেব। প্রথমে গ্রহ আর
উপগ্রহ, তারপর তারামণ্ডল। এক একটা নক্ষত্র দেখতে পেলে দেখবি
গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে। কিন্তু তার আগে খানিকটা বেসিক জেনে নেওয়া দরকার।”
পরদিন বিকেল
থেকেই আমাদের মহাকাশচর্চা শুরু হয়ে গেল। গুবলুদার কথা শুনে মোটেও মনে হয় না
পড়াশুনা করছি, মনে হয় গল্প শুনছি। আর সে সব কী দারুণ, রোমাঞ্চকর গল্প! সূর্যের মধ্যে যে তেরো লক্ষ পৃথিবী ঢুকে যাবে অথবা মঙ্গল
গ্রহে যে নীল রঙের সূর্যাস্ত দেখা যায়, সে কথা কি রবিদা জানে?
একদিন অনিন্দিতা
জিজ্ঞেস করল, “গুবলুদা, ব্ল্যাকহোল কী? রবিদা বলছিল সে নাকি তারামণ্ডলে গিয়ে ব্ল্যাকহোলে
ঢুকেছে?”
গুবলুদা চা
খাচ্ছিল। কথাটা শুনে সে এমন হাসতে লাগল যে চা ছলকে পড়ে গেল মাটিতে। হাসতে হাসতে কাশি হয়ে তার বিষম লাগে আর কি! একটু ধাতস্ত হয়ে গুবলুদা বলল, “ওরে ব্ল্যাকহোল হল যেখানে মাধ্যাকর্ষণ অনেক বেশি। ব্ল্যাকহোল সব
জিনিসই টেনে নেয়, আলোকেও টেনে নেয় এই ব্ল্যাকহোল! অনেকের ধারণা এই ব্ল্যাকহোলের শেষ বিন্দুতে
আবার একটা হোয়াইট হোল আছে, অনেকটা ইন্টারস্টেলার সিনেমায় দেখানো ওয়ার্মহোলের মতো! সেখান
দিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে যাওয়া যায়, যা আমাদের পৃথিবীর মতো হলেও অনেকটা আলাদা! তবে
তার কোনও প্রমাণ নেই। আসল কথা হল পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে যে ব্ল্যাকহোল--দ্য
ইউনিকর্ণ-- সেটা প্রায় ১৫০০ আলোকবর্ষ দূরে! এক আলোকবর্ষ কতটা জানিস তো?”
আমি বিদ্যা
ফলানোর চেষ্টা করে বললাম, “এক বছরে আলো যতটা দূরে
যায়। এক সেকেন্ডে যদি তিন লক্ষ কিলোমিটার দূরে যায়, ১৫০০ বছরে...ও গুবলুদা! এ তো অনেক দূর!”
গুবলুদা আবার
চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, “তবে আর বলছি কী! বরং কাছেই
বলতে হবে। পৃথিবী তো আকাশগঙ্গা গ্যালাক্সিতে অবস্থিত, এরকম আরেকটা গ্যালাক্সি হল অ্যান্ড্রমিডা। প্রায় পঁচিশ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে
অবস্থিত। অবশ্য পঁচিশ হাজার পঞ্চাশ হাজার দূরত্বে কিছু পুঁচকে গ্যালাক্সিও আছে বটে, সেগুলোতে প্রাণের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।”
আমি উত্তেজিত হয়ে
বললাম, “অ্যান্ড্রমিডা গ্যালাক্সির কোনও গ্রহে মানুষ বা
অন্য জীব থাকতে পারে গুবলুদা?”
গুবলুদা ঠেস দিয়ে
বলল, “কে জানে? হতেও পারে। প্রায় একশ কোটি তারা আছে ওই গ্যালাক্সিতে, সেই তারার তারামন্ডলে কতগুলো করে গ্রহ আছে ভাব! কিন্তু অতদূর যাবে কে? একমাত্র যদি গ্যালাক্সি নিজেই চলে আসে...”
“গ্যালাক্সি নিজে
চলে আসবে কি গো?” আমাদের বৃহস্পতি চোখ গুলুগুলু
করে বলল, “তারারা কি হেঁটেচলে বেড়াবে নাকি? ওরা তো স্থির বলেই জানি।”
গুবলুদা একটু
মাথা চুলকে বলল, “ও তোদের বোঝানো মুশকিল। কোয়ান্টাম ফিজিক্স আর
স্ট্রিং থিওরির কচকচি আছে। ওই সব নিয়েই তো মার্ভেলের সিনেমা করে। মোদ্দা কথা হল
তারা বা নক্ষত্র স্থির হলেও মহাকাশ দিন দিন ছড়াচ্ছে। অ্যান্ড্রমিডা গ্যালাক্সি
প্রতি সেকেন্ডে একশ দশ কিলোমিটার বেগে আমাদের দিকে এগোচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে কয়েক
কোটি বছর পর ধাক্কা লাগবেই। দু’জন মিলে প্রকাণ্ড একটা গ্যালাক্সি তৈরি করবে তখন।”
প্রায় প্রতিদিনই
এরকম আলোচনা হয়, বাড়িতে গিয়ে নিজেরাই নেট ইন্টারনেট চালিয়ে দেখি।
গুবলুদা চমৎকার সব সাইটের হদিস দিয়েছে, সেখানে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেয়। এর মধ্যে আমরা টেলিস্কোপও ব্যবহার করছি।
প্রথমদিন তো সুপারমুন দেখে তো বিস্ময়ে আমাদের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল—কী বড়
দেখাচ্ছিল চাঁদটাকে--এখন আমরা কালপুরুষ মণ্ডলের নক্ষত্র চিনছি। টেলিস্কোপের দিকে
চোখ লাগিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে থাকার সময় আর কিছু মনে থাকে না, একটা মুগ্ধতার আবেশ আমাদের ঘিরে রাখে।
কত কত তারা, কত গ্রহ উপগ্রহ ধূমকেতু অনন্ত কাল ধরে মহাকাশে ঘুরছে, হাজার বছর পরেও তারা একই ভাবে থেকে যাবে। হয়তো ওই আকাশের কোনও জায়গাতেই থরের
গ্রহ অ্যাশগার্ড, অথবা আমাদেরই গ্রহের মতো একটা গ্রহ আছে। গুবলুদা
বলেছে স্পেসটাইমের সময়ের মাত্রা অন্যভাবে ধরা হয়, আমরা একই সময় অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে থাকি, কিন্তু বুঝতে পারি না। সেক্ষেত্রে টাইম ট্রাভেল করে
ডায়নাসোরদের যুগে
যাওয়া অসম্ভব নয়। যদিও এ সব খুব জটিল ব্যাপার, কিন্তু বৈজ্ঞানিকরা মাথা ঘামাচ্ছে। হয়তো কোনওদিন সত্যিই টাইমমেশিন তৈরি হবে।
ইতিমধ্যে মাস
দুয়েক কেটে গেছে। রবিদার হামবড়া ভাবকে আমরা আজকাল আর আমল দিই না। ও বেচারা স্পেস
কুইজ জিতেই আনন্দে আছে, মহাকাশের অজানা জগত
সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। এখন আমরা জানি যে একটা স্পেস স্যুট তৈরি করতে প্রায়
নব্বই কোটি টাকা লাগে, কেউই সেটা রবিদাকে পাঠাতে
পারবে না।
আমরা এখন জানি
হ্যালির ধুমকেতু রোজ রোজ আসে না, আসে পঁচাত্তর বছর পর পর।
শুক্র গ্রহের এক দিন মানে পৃথিবীর আট মাস কারণ শুক্র তার অক্ষে ঘোরে খুবই ধীরে।
পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুর তাপমাত্রা প্রায় সূর্যের সমান। শনি গ্রহকে ঘিরে ধরা
স্যাটার্ন রিং তৈরি হয়েছে বরফের কুচি দিয়ে। মঙ্গল গ্রহে মাউন্ট এভারেস্টের চেয়ে
তিন গুণ উঁচু একটা পাহাড় আছে, সেটা আবার আগ্নেয়গিরি। আবার বৃহস্পতির ইউরোপায় এক একটা প্রস্রবণ বা সল্ট
ওয়াটার গিজার এভারেস্ট-এর কুড়ি গুণ।
মঙ্গল গ্রহে নীল
রঙের সূর্যাস্ত হয় আর মহাকাশে হাওয়া নেই বলে চেঁচিয়ে গান গাইলেও শোনা যাবে না। বুধ, শুক্র আর ইউরেনাস আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে, প্লুটো আর বৃহস্পতি এখন টেলিস্কোপে নক্ষত্র খুঁজে বার করতে ওস্তাদ। আমরা সবাই
মোবাইলে 'স্টেলেরিয়াম' বলে একটা অ্যাপ ডাউনলোড করে নিয়েছি, তাতে নক্ষত্রের
অবস্থানের উপর
নজর রাখা যায়। নাসা ও ইসরোর মহাকাশ অভিযানের খবর পড়ি মন দিয়ে, অন্য গ্রহে রোবটের সাহায্যে মহাকাশ নামানোর ভিডিও দেখি। কী দারুণ লাগে দেখতে!
এখন আর গুবলুদা
আমাদের নিজে থেকে কিছু বলে না। আমরা নিজেরাই এক একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করে
দিই। কোনওদিন রকেটের প্রযুক্তি নিয়ে কথা হয়, কোনওদিন আলোচনা হয় ইন্টারস্টেলার অভিযান নিয়ে। আমাদের আগ্রহ দেখে গুবলুদা
প্রত্যেককে এক কপি করে 'ফার্স্ট বিগ বুক অফ স্পেস' আর 'অ্যান অ্যাস্ট্রনট গাইড টু লাইফ' দিয়েছে, সেইগুলো একটু একটু করে
পড়ছি। এরই মধ্যে দুর্গাপুজো চলে এল। স্পেস কুইজ এর ঘোষণা করা হয়ে গেল। আমরা নাম
লিখিয়ে দিয়েছি টিম ইভেন্টে, রবিদারাও লিখিয়েছে।
নির্দিষ্ট দিনে
গিয়ে দেখি গুবলুদাকে বিশেষ অতিথি করে নিয়ে এসেছে পূজা কমিটির লোকজন। সে নিজে ইসরোর
বৈজ্ঞানিক! তাকে আমন্ত্রণ না জানানোই আশ্চর্য!
প্রতিযোগিতার দিন
আমরা মোটেও উত্তেজিত হইনি। না জিতলেও কী? এই সূত্রে গুবলুদার সঙ্গে আলাপ তো হল! তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমাদের
প্রত্যেকের কাছে একটা নতুন দিগন্ত খুলে গেছে। প্রতিযোগিতার কথা ভেবে শুরু করলেও
পরে আমরা নিজের আগ্রহেই পড়াশুনা চালিয়ে গিয়েছি। রবিদার কথা মাথা থেকে বেরিয়েই
গিয়েছিল।
নির্দিষ্ট সময়ে খেলা
শুরু হয়ে গেল। বেশিরভাগই সহজ প্রশ্ন, অসুবিধা হয়নি কারো। ‘বাজর’
রাউন্ডে অবশ্য রবিদার টিম আগেভাগে বেশ কয়েকবার বেল টিপেছে, কিন্তু গতানুগতিক উত্তরের বাইরে মহাকাশ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনি। শেষ
রাউন্ডটা ছিল ‘এক্সটেমপোর’, তাতে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে সবাই নিজের মতো কিছুক্ষণ কথা
বলবে। সেই রাউন্ডে রবিদাদের কেউই আমাদের সামনে দাঁড়াতে পারল না। আমরা প্রত্যেকে
একটা করে বিষয় ভেবে রেখেছিলাম, সেই নিয়ে কিছুক্ষণ কথা
বললাম। আমাদের কথা শুনে তো বিচারকরা সবাই চমকে উঠল। তাদের হাততালি আর থামে না।
কুইজের শেষে সর্বসম্মতিতে আমাদের জয়ী ঘোষিত করা হল। একটা বড় কাপ আর বেশ কিছু
উপহার। আড়চোখে দেখি রবিদার মুখ কালো হয়ে গেছে।
গুবলুদা দেখি
আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফিসফিস করে সে বলল, “তোদের এই সিক্রেটগুলো ওর সঙ্গে শেয়ার করবি না? ও বেচারা তো জানতেও পারবে না
তোরা কোন
গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছিস?”
হঠাৎ আমাদের খুব
দুঃখ হল রবিদার জন্য। আমরা সবাই এগিয়ে গেলাম তার দিকে। তার সামনে গিয়ে বৃহস্পতি
বলল, “ইন্টারস্টেলারের ডিভিডি পেয়েছি। সিনেমাটা
আমাদের সঙ্গে বসে
দেখবে রবিদা? তোমার বন্ধুদেরও ডেকে নাও। সবাই মিলে খুব মজা হবে।
চল, আমরা আবার ভাব করে নিই।”
রবিদা কিছুক্ষণ
অবাক হয়ে আমাদের দিকে চেয়ে রইল। তারপর কেঁদে উঠল। বৃহস্পতিকে জড়িয়ে ধরে সে বলতে
লাগল, “সরি। সরি। সরি...”