অফিস থেকে ছুটি নিতে হলে যে কত মিথ্যে কথা বলতে হয়, তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। মিথ্যে বললেও চলবে না, সেই কথাটা হতে হবে একেবারে বিশ্বাসযোগ্য আর নতুন ধরনের। ছুটি না নিলে দেশ দেখার কোনো সুযোগ নেই, আর বেশিদিন শহর আর অফিসের চক্কর কাটলে আমার মাথার পোকা কিলবিল করে ওঠে। তাই কালে কালে এই বিদ্যায় আমি ভালোই হাত পাকিয়েছি। সেই টুকরো টাকরা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাগুলোর আসল মর্ম বুঝতে পারি বছর কয়েক পর যখন বিশেষ বিশেষ মুহূর্তগুলো উঁকি মারে স্মৃতির পাতা থেকে। সেরকম একটা অদ্ভুত ঘটনার কথা লিখলাম আজ।
ঋষিকেশ জায়গাটার সঙ্গে আমার চাক্ষুষ পরিচিতি ঘটে ২০০৯ সালে। আমি সে বার আমার বন্ধু সুহাসের সঙ্গে পুজোর ছুটিতে পালিয়ে গিয়েছিলাম হরিদ্বার আর ঋষিকেশ দেখব বলে। হরিদ্বারে ভেল-এর অফিসে আমরা অ্যাপ্লাই করেছিলাম ইন্টার্নশিপের জন্যে, সেই বাহানায় কলেজ থেকে দু'দিন আগে ছুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়া হল। দুন এক্সপ্রেস ধরে হরিদ্বারে যখন নামলাম সকাল তখন ৫টা। লোকজনের ভিড় তখনও আরম্ভ হয়নি। শীতের সকাল। ২০১০ সালের কুম্ভমেলার জন্যে শহরের সব রাস্তা ভেঙেচুরে নতুন করে বানানোর কাজ চলছে। আমরা এই গলি সেই গলি হয়ে একজন মাড়োয়ারি ধর্মশালায় গিয়ে ঘাঁটি গাড়লাম। ধর্মশালা না বলে বাড়ি বললেই ঠিক হয়, আমাদের জুতো খুলে হাতে নিয়ে গিয়ে ঢুকতে হলো ঘরে। বাড়িওয়ালা এসে ঘরে গঙ্গাজলের ছিঁটে মেরে গেল। আমাদের মত পাপী তাপী ছেলেছোকরাদের গৃহস্থ ঘরে ঢোকাবার আগে এইটুকু তো করতেই হবে। আমি আর সুহাস চোখ টেপাটেপি করলাম বুড়োর কান্ড দেখে।
কিছুক্ষণ পর অবশ্য বেশ লাগল। কলের ঠান্ডা জলে স্নান করে রাত্তির জাগার ক্লান্তি কেটে গেছে।কাঁধে ব্যাগ নিয়ে আমরা বেরোলাম শহর পরিদর্শনে। একে একে দোকান বাজার খুলছে।গরম গরম আলুর পরোটা সাঁটিয়ে আগে আমরা চললাম ভেলের ক্যাম্পাসে। বেশ দূরে যেতে হল।ঘন্টা দু'য়েক এই অফিস সেই অফিস চক্কর লাগিয়ে বুঝলাম এই বছরে ইন্টার্নশিপের সিট শেষ হয়ে গেছে, অতঃপর আসল কাজ রয়ে গেলো শহর পরিক্রমা আর গঙ্গায় স্নান। পকেটে পয়সা বলতে কিছুই নেই, তার ওপর আমাদের প্ল্যান আছে ঋষিকেশ যাওয়ার তাই যতটা সম্ভব পয়সা বাঁচাতে হবে। জিজ্ঞেস করে জানা গেলো হর কি পৌরি মাইল ছয়েক হবে, সময় নষ্ট না করে পদচালনা আরম্ভ করে দিলাম। পথে যত মন্দির পড়লো ঢুঁ মারলাম বোঁদে আর নকুলদানার লোভে। মায়া দেবী মন্দির থেকে মনসা দেবী মন্দির কোন জায়গাতেই নিরাশ হতে হয়নি, মুখ চলেছে ক্রমাগত। একমাত্র ভারতমাতা মন্দির ব্যতিক্রম।কি আর করা!
ঘণ্টাপাঁচেক শহরের রাস্তা, গলি-তস্য গলি উদ্ধার করে যখন হর কি পৌরি পৌঁছলাম চারটে বেজে গেছে। পেট খিদেয় চুঁই চুঁই করছে। তল্পিতল্পা নামিয়ে গঙ্গায় ডুব দিতেই ক্লান্তি পাইঁ পাইঁ করে ছুটে পালালো। যা ঠান্ডা জল। তিড়িং তিড়িং করে লাফিয়ে উঠে পড়লাম জল থেকে। খিদেটা আরো বেড়ে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিখ্যাত গঙ্গা আরতি আরম্ভ হয়ে গেলো। আমরা গুটিসুটি মেরে বসে আছি একদিকে। এমন সময় দেখি সবাইকে হালুয়া দেওয়া হচ্ছে শালপাতার ঠোঙা করে।ব্যস, আর যায় কোথায়! লাফিয়ে উঠে পড়লাম। কয়েক পাতা হালুয়া খেয়েই গায়ে জোর এসে গেছে। ভালো লাগছে আরতি দেখতে। বসে রইলাম গঙ্গার ঘাটেই। রাতেও খিচুড়ি দেওয়া হলো গীতা আশ্রমের উঠোনে। গরম গরম খিচুড়ি খেয়ে চললাম ঋষিকেশের উদ্দেশে। আজ রাতের মধ্যেই ঋষিকেশ পৌঁছনোর কথা। একঘন্টা দেড়ঘন্টার রাস্তা। রাতবিরেতে কোথাও পৌঁছে গেলে দেখেছি সস্তায় কিছু ব্যবস্থা হয়েই যায়, লোকেরা রাতে থাকতে দেয় সহজেই। পয়সা বাঁচানোর জন্যে এই পন্থাটা অনেক জায়গায় আমার কাজে লেগেছে।একটা ঋষিকেশগামী অটোতে উঠে পড়লাম দরদাম করে। যাত্রী খালি আমরা দু'জন।
অটোওয়ালা নিজেই ঋষিকেশে থাকে। সে বাড়ি ফিরছে। রাস্তা চলে গেছে রাজাজি ন্যাশনাল পার্কের ভিতর দিয়ে। দু' পাশে ঘন জঙ্গল, এই জঙ্গলে প্রচুর হাতি আছে। অটো সাঁ সাঁ ছুটছে।হাওয়ায় শীত করছে রীতিমত। তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঢুলুনি এসেছিলো বোধহয়। এমন সময় অটোওয়ালা চিৎকার করে অটো থামিয়ে দিল। ধড়মড় করে জেগে উঠলাম। কী হলো? হাতি নাকি?
দেখি সামনের আলোয় একটা দাড়িওয়ালা লোক দু হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছে। আরেকটু হলেই চাপা পড়তো। ডাকাত নাকি? না পাগল? রাট দশটার সময় এই জঙ্গলে একলা কি করছে রে বাবা?অটোওয়ালা ততক্ষণে সাতপুরুষ উদ্ধার করে দিয়েছে লোকটার গালাগাল দিয়ে কিন্তু সে নির্বিকার। এইবার একটু সাহস পেয়ে আমিও নেমে পড়লাম।দেখা গেলো লোকটা বিদেশি, খোঁচা খোঁচা দাড়ি। কথা বলে বুঝতে পারলাম পাগলও না, ডাকাতও না। অটো পায়নি বলে হরিদ্বার থেকে পায়ে হেঁটেই ঋষিকেশ যাবে বলে বেরিয়ে পড়েছিল, কিন্তু মাঝরাস্তায় আমাদের অটো দেখে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে। ঋষিকেশ যেতে চায় আমাদের সঙ্গেই। আচ্ছা পাগল লোক যা হোক, রাতদুপুরে একা একা জঙ্গলের পথে হাঁটা মেরেছে।কথা না বাড়িয়ে ওকে বসিয়ে নিলাম।
লোকটা বেশি কথা বলল না। আলাপ জমল না,খালি জানতে পারলাম যে ব্যাটা আমেরিকান।ঋষিকেশে যা যোগ নিয়ে লাফালাফি, বাবাজি নিশ্চয়ই অনেকের মত যোগা করতে এসেছে, এই ভেবে ওকে আর ঘাঁটালাম না। এগারোটার কাছাকাছি ঋষিকেশ আসতে সে ধন্যবাদ জানিয়ে নেমে চলে গেল, আমরাও চললাম আমাদের ডেরার সন্ধানে। খোঁজাখুঁজি করে একটা কামরা পাওয়া গেলো। কয়েক ঘন্টার ব্যাপার। বিছানায় পড়তেই ঘুম। সকাল হতেই স্নান সেরে ব্যাগ কাঁধে বাইরে। অনেক ঘোরাঘুরি আছে। তারপর আমাদের রাফটিং-এর প্ল্যান ছিল। রবারের রাফ্ট করে শিবপুরি থেকে রামঝুলা অব্দি রাফটিং হয়, গঙ্গার ওপর। দরাদরি করে একজনকে রাজি করানো হল।
তার গাড়িতে করে শিবপুরি যেতে লাগলো এক ঘন্টা। নদীর ধারে নেমে এসে আগে রবারের নৌকো বা রাফ্টটাকে পাম্প করে ফোলাতে হলো। রাফটিং করতে গেলে বৈঠা ধরা আর রোয়িং(এখানে বলে প্যাডলিং) করাটা একটু অন্যরকম কেননা পাহাড়ি নদীতে আকছার স্রোত বেড়ে rapid তৈরী হয়। যত স্রোত বেশি হবে,আর পাথর বেশি থাকবে, তত বেশি ঝুঁকি এই rapid এর ওপর রাফটিং করা। লেভেল ফোর অব্দি rapid আছে ঋষিকেশে। লাইফজ্যাকেট আর হেলমেট লাগিয়ে যাত্রা শুরু হলো। সুহাস ও আমাকে ছাড়া আরো কয়েকজন আছে।সামনের ছেলেটা ইন্সট্রাক্টর। এমন সময় দেখি আমার ডানদিকে বসে প্যাডলিং করছে কাল রাতের সেই পাগলা সাহেব। আমরা দেখে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলাম। সাহেব অবশ্য ঘুরেও তাকালো না। একমনে প্যাডলিং করছে।এমন সময় প্রথম rapid চলে এলো। নৌকোটা থরথর করে কাঁপছে। একবার সামনে পড়ে একবার পিছনে। বড় বড় জলের স্রোত এসে আছড়ে পড়ছে চোখে,মুখে,নৌকোর ভিতর,তার মধ্যে আমরা প্যাডলিং করছি। থামলে বিপদ, প্যাডলিং করে যেতে হবে। একসময় পার হয়ে এলো জায়গাটা, কিছুক্ষণ শান্ত নদীর সুন্দর জলে পাহাড় আর আকাশ দেখতে দেখতে যাওয়া,তারপর আরেকটা লেভেল টু rapid..একইরকম ভাবে আরো জোরে লাফাতে লাগলো আমাদের রাফ্টটা। জল এসে জামাকাপড় সব ভিজিয়ে দিচ্ছে। এমন সময় একটা আর্তনাদ শুনে দেখি সামনের ডান দিকের ছেলেটা ঝাঁকুনির চোটে পড়ে গেছে সেই উত্থালপাত্থাল জলে।তারপর আরো অবাক হয়ে দেখলাম ইন্সট্রাক্টর কিছু বলার আগেই, সাহেবটা সেই নদীর র্যাপিডের মধ্যে লাফিয়ে পড়েছে। জল ও পাথর কাটিয়ে ছেলেটার কাছে পৌঁছে, আঁকড়ে ধরে তাকে টেনে আনছে রাফ্টের দিকে।
রাফটিং এর আনন্দ মাটি হয়নি, কোনও দুর্ঘটনাও হয়নি। বরং যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেটা অপূর্ব সুন্দর ও আনন্দের। আরো বেশ কয়েকবার পরে রাফটিং করেছি। রাফটিং করে আমরা আবার ঋষিকেশে চর্কিঘোরান ঘুরেছিলাম দু'দিন ধরে।
এরপরের গল্প ২০১৫ সালের। ব্যাঙ্গালোরে থাকি।চাকরি থেকে নানা কাজের ছুতো নিয়ে গেছি একমাসের mountaineering কোর্স করতে উত্তরকাশী। নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং। নানা রাজ্যের, নানা দেশের ছেলেরা এসে জুটেছে সেখানে।বপ্রথম দশদিন rockcraft, তারপর বারো হাজার ফিট ট্রেক করে তাঁবুতে থেকে শিখতে হয় স্নোক্রাফট আর আইস ক্রাফট।
ব্যাপারটা শুনতে অ্যাডভেঞ্চারাস মনে হলেও আদতে প্রচুর টেকনিকাল ব্যাপার থাকে। দড়ির নট আর ইকুইপমেন্টস হ্যান্ডেল করতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়ে যেতে হয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা যা হয় তার জন্যে সব কিছু বাজি রাখা চলে। আমার সঙ্গে বেশ কয়েকজন বিদেশি ছেলেমেয়ের বন্ধুত্ব হয়ে গেলো এই সময় (এখনও আছে)। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাট হেলথ ইন্সট্রাক্টর(হিরো হিরো দেখতে), টেক্সাসের বেন(লম্বা চেহারা,আসলে কাউবয়),প্যারিসের নাওমি (চেহারা দেখে নাওমি হ্যারিসের কথা মনে পড়ে),প্যাট্রিক (এও টেক্সাস,মাথা কামানো,রং করা দাড়ি,প্রতিবছর ভারতে আসে ) আর রুপেন (নিউজিল্যান্ডের ছেলে,আসলে ডাক্তার)।
এর মধ্যে সকলেই ভীষণ ভাবে disciplined একমাত্র প্যাট্রিক ছাড়া। সে ব্যাটা ক্লাসের তোয়াক্কা করে না, মাস্টারদের সঙ্গে ঝগড়া করে। ঘরে পাখার ওপর কাপড়ের হ্যামক ঝুলিয়ে বাদুড়ের মতো কসরত করে। আজব মাল!
ছেলেরা অবশ্য তার পাগলামি স্বভাব দেখে বেশ মজা পায় কিন্তু ইন্সট্রাক্টরদের পাগল হওয়ার জোগাড়। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেউ ওকে কিছু বলে না কারণ সে তুখোড় স্পোর্টসম্যান। ক্লাইম্বিং-এর সময় সে এমন তরতর করে পাহাড়ে উঠে যায় যে তাকে দেখে গিরগিটি মনে হয়। ৩০ কেজির ব্যাগ নিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে যায় অনায়াসে। এমন কয়েকটা টেকনিক সে জানে যেগুলো ইন্সট্রাক্টররাও পারে না।
দিন কাটতে লাগলো। প্রচন্ড কড়া ডিসিপ্লিন আর হাড়ভাঙ্গা খাটুনিতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে এসেছে। একসময় আমরা উঠে গেলাম আরো ওপরে গ্লেসিয়ার ক্লাইম্বিং শিখতে। সেখানে প্রত্যেকদিন বেসক্যাম্প থেকে পাহাড়ে চড়তে হয় তিনঘন্টা ধরে,তারপর গ্লেসিয়ারে ট্রেনিং হয় আরো চার ঘন্টা, তারপর দু' ঘন্টা ধরে নেমে বেসক্যাম্পে ফেরা। আমরা দিন গুনছি।
Anchoring, belaying, fixed rope climbing সব হয়ে গেছে। ফেরার ঠিক আগের দিন একটা কান্ড হল। আমরা সে দিন তিনশো ফিট উঁচু একটা গ্লেসিয়ারে ক্লাইম্ব করছি। নীচে যেখানে গ্লেসিয়ার শেষ হচ্ছে, সেখানে একটা কুড়ি ফিট গভীর ফাটল। তার মধ্যে abolition zone, মানে গ্লেসিয়ার গলে জল বয়ে যাচ্ছে সেখান দিয়ে। আইস পিটন মেরে মেরে বরফে লাগাতে হবে তারপর সেই পিটনে দড়ি বাঁধতে হবে। একসঙ্গে বেশ কয়েকজন ক্লাইম্ব করে সময় কম বলে। সবচেয়ে আগে প্যাট্রিক লিড ক্লাইম্ব করে প্রায় ওপরে উঠছে তারপর পিছনে উঠছে অনুপ।
এমন সময় anchor আলগা হয়ে আইস পিটন বেরিয়ে গেলো। অনুপ কিছু বোঝার আগেই প্রায় দেড়শো ফুট নিচে পড়ে গেলো। ওপরে anchor লাগানো ছিল বলে সে মাটিতে পড়ল না কিন্তু abolition zone এর গর্তে ঝুলতে লাগলো, সেখানে কিচ্ছু দেখা যায় না। ঘর অন্ধকার খালি জলের স্রোতের শব্দে কানে তালা লেগে যাচ্ছে।জলে পড়ে গেলে উদ্ধার করা অসম্ভব। আমাদের কিছু বোঝার আগেই দেখলাম প্যাট্রিক ওপরের anchor এ দড়ি লাগিয়ে সরসর করে র্যাপলিং করে নেমে গেলো নীচে। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সে অনুপকে ওপরে নিয়ে এল। ইন্সট্রাক্টরদের বকুনি খেতে হলো প্যাট্রিককে। কেন তাদের না জানিয়ে নেমেছিল সে? সেফটির ব্যবস্থা ছাড়া খালি একটা হোল্ডের ভরসায় এমন করা প্রচন্ড ঝুঁকির। কিন্তু তখন সে ক্যামেরায় ফটো তুলতেই ব্যস্ত।
যা হোক, একসময় কোর্স শেষ হল। ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলো সকলের সঙ্গে, আর কোনোদিন দেখা কি হবে সামনাসামনি? ফেসবুক একমাত্র যোগাযোগ, এদের ফটো দেখি, লাইক করি কখনও।
এর পরের ঘটনা ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের। রোজকার মতো ফেসবুক করছি। এমন সময় প্যাট্রিকের একটা ফটো দেখতে পেলাম। ঋষিকেশের ছবি, ছবিটা চেনা মনে হলো খুব।প্যাট্রিকের প্রোফাইল খুলে দেখি সে একজন সার্টিফাইড রাফটিং ইন্সট্রাক্টর। তার প্রথম রাফটিং এক্সপেরিয়েন্সের ছবি লাগিয়েছে আট বছর আগেকার। ঋষিকেশে, তখন ওর মাথা কামানো ছিল না, দাড়িগুলো রং করা ছিল না। আর তার সঙ্গে ফটোতে দেখা যাচ্ছে আমার নিজের ছবি।তার প্রথম রাফটিং এক্সপেরিয়েন্স আর আমার প্রথম রাফটিং এক্সপেরিয়েন্স। একসঙ্গে।
সে দিন রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি।
(ক্লাইম্বিং এর ছবি টবি বিশেষ নেই। তখন সে সব মাথায় থাকে না। এই অসহ্যকর ছবিটা কে যেন তুলেছিল প্রথম দিনই, সেটাই দিয়ে দিলাম)