দাসত্বের হাজার বছর আর তাড়া করে না আমায়।পিছন থেকে আওয়াজ দেয় না ধেয়ে আসা আগুন আর রক্তপাতের উল্লাস।নির্বাসনের আগত সমাপ্তির কথা ভাবতেও আর ইচ্ছে করে না।নতুন নাম নেওয়া হয়নি,আর নেবও না।আর্থিক স্বচ্ছলতা আর আদর্শের নিশ্চয়তা ছাড়াও বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পেয়েছি।কলেজে পড়ার সময় যে গানের কলি শিখে ভুলে গেছিলাম,গিটার চলে গেছিলো আলমারির আড়ালে,সেই গানের লাইন আওড়ালে আর গিটারের বোল তুললে যে পয়সা ফেলে এদেশে সে আমার জানা ছিল না। পালিয়ে আসার মাসুল চুকিয়েছিলাম লেখাপড়ার নিস্পত্তি করে।কিন্তু জ্ঞানবৃদ্ধির সুযোগ জুটে গেছে বিনিপয়সাতেই।খালি পরীক্ষার বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেয়ে গেছি।টিমটিমে আলোর নীচে দিয়ে কানা গলি দিয়ে হেঁটে আসি,অসুখ করা পুরোনো বাড়ির আহ্লাদী ছোট ঘরটায়।চে বিদায় নিয়েছে,বিদায় নিয়েছে মাও,কি করে যেন টেবিলে এসে জায়গা দখল করেছে,ভয় ভয় পাওয়া মুখে একটা ট্রাম্পেট।কালশিটের রং যদি বা না যায়,মিছিল এর উৎসাহ আর বিপ্লবের উন্মাদনা চলে গেছে প্রয়োজনে,অবিশ্বাসে আর সময়ের আহ্বানে।নতূন করে ভেবেছি,কোথায় ভুল ছিল?আদর্শে ভুল ছিল না,ভুল ছিল না বিশ্বাসে।খালি একটাই অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা।নিজের বিশ্বাস অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার,যারা শুনতে চায় না,তাদের জোর করে শোনাবার।যারা বুঝতে চায় না,তাদের কানের সামনে চিৎকার করার।মানুষ বদলায়নি,শাসন বদলায়নি,আমরাই বদলে গেছি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।পল সেজান নিজের দৃষ্টিকোণ চাপিয়ে দেননি কোনোদিন,ফেলিনি জোর করে কারোকে সিনেমা দেখায়নি,ডিলান নিজের জন্যেই গান লিখেছে।কিন্তু সেই শিল্পে পৃথিবীর চেহারা পাল্টেছে,মানুষের মন পাল্টেছে।আমরা গান শুনতে চাই,বক্তৃতা নয়।গান শুনিয়ে বিপ্লব হয়েছে বলে আমাদের জানা ছিল না।এস্তোনিয়ার সিংগিং রেভোল্যুশন এর কথা জানতাম না।দাসত্বের হাজার বছর তাড়া করে না আর তাই,গিটারে আমার বিপ্লব। বন্দুক দেখলে ঘেন্না হয় না,করুণা হয়।আমার বিপ্লব চলবে,নানা দেশে,নানা ভাষায়,গান গাইবো,গান শোনাবো।যদি একজনের চোখেও জল আসে এই গান শুনে,তাকে কেউ বাঁধতে পারবে না। সে স্বাধীন ...চিরকালের জন্যে।