বৃহস্পতিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৫

শীতের বৃষ্টি


চোখ খুলতেই মনে হল, এখনও মনে হয় ভোর  হয়নি। বাইরে এখনও অন্ধকার। কম্বলটা টেনেটুনে আবার ঘুমাবার চেষ্টা করলাম।শীতটা এবার বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে। যতক্ষণ মুড়িসুড়ি  দিয়ে শুয়ে থাকা যায়, এই মতলব। চোখ লেগেই এসেছিল। হঠাৎ ফোনের এলার্মের শব্দে চটকাটা ভেঙ্গে গেল! ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি, সাড়ে সাতটা বেজে গেছে। তাহলে এখনও সূর্যের আলো দেখতে পাচ্ছি না কেন? তড়বড় করে উঠে জানলাটা খুলে দিলাম।যা ভেবেছিলাম। আকাশ মেঘে কালো হয়ে আছে, টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। সেরেছে! শীতকালে বৃষ্টি। এবার শীত আরো বাড়বে।

ভাগ্যক্রমে আজ আমার ছুটি। মাঝে মাঝে এরকম হঠাৎ করে বৃষ্টিবাদলার দিন আমার বেশ লাগে। শীতের আমেজ। টুপটাপ করে বৃষ্টির জলের আওয়াজ। ভিজে লতাপাতা দেখতে দেখতে চায়ে চুমুক দেওয়ার জন্যে আদর্শ। গরম গরম খিচুড়ি আর মাছভাজার কথাও মনে হয়.ইসসস...কতদিন খাইনি। যদিও এরকম দিনে স্নান করার দরকার পড়ে না, গরম জলে আরাম লাগবে বলেই একেবারে স্নান সেরে বেরোলাম। আজ আর কোন কাজ করব না বলে ঠিক করেছি।কুঁড়েমি করেই কাটিয়ে দেব আজকের দিনটা। নিছক আলসেমি করা আর নিজের খেয়ালখুশি মত ভাবনা নিয়ে লোফালুফি করার সুযোগ পাওয়া  দুর্লভ। বেশি করে আদাকুচি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে চা বসালাম।এক হাতে চা নিয়ে,আর শালটা ভালো করে জড়িয়ে বসলাম বারান্দায় রাখা আরামকেদারাটায়।কতকাল পর। টুপ টাপ  করে বৃষ্টি হয়েই চলেছে।দুরের রাস্তাটা ধোঁয়া-ধোঁয়া মনে হয়, চারিদিকে একটা ভিজে ভিজে ভাব! মাঝে মাঝে হাওয়ায় কাঁপুনি ধরে যায়.সাজানো অর্কিডের টবগুলোয় বৃষ্টির জল  চুইয়ে পড়ছে। কয়েকটা কাঠবেড়ালির ছানা ছোটাছুটি করছে কার্নিশের ওপর। বিচ্ছিন্ন ভাবে দাঁড়িয়ে ভিজছে একটা অর্জুন গাছ.চারিদিকে চোখ বুলিয়ে চায়ে চুমুক দিলাম। কি শান্তি !

শীতের বৃষ্টি, ঠান্ডা কোমল 
নিরালা কোনায় ...তুমি 

চোখের পলক,আপনি বোজে 
এক ফোঁটা  ..দুষ্টুমি 

ঘড়ির কাঁটায় ,দিন চলে যায় 
বৃষ্টি... প্রশ্ন...আমি 

অবশেষে রাত, বৃষ্টি বিদায় 
দুরত্ব...অনুগামী 

জড়িয়ে রাখি,ব্যবধান, এই মায়ার অন্তরালে 
এস ফিরে এস,সাক্ষাত হবে, আবার আগামী কালে 

শীতের বৃষ্টি, শুভরাত্রি..